মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার দেশে ফিরেছেন। গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে দেশে ফেরেন তিনি। খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২১০৯) প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে আজ সকাল ৭টা ২৪ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। ফ্লাইটটি গতকাল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে দেশের পথে রওনা হয়।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরে স্কটল্যান্ডের বন্দরনগরী গ্লাসগো পৌঁছান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্লাসগোতে তিনি বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৬) বিশ্বনেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে এবং অন্যান্য ইভেন্টে যোগ দেন। গ্লাসগোতে অবস্থানকালে ১ নভেম্বর সকালে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ ইভেন্ট ক্যাম্পাসে (এসইসি) কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ‘সিভিএফ-কমনওয়েলথ হাই লেভেল প্যানেল ডিসকাশন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক একটি ইভেন্টে যোগ দেন। কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসির সঙ্গে একটি বৈঠকের পর তিনি কপ২৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং একই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্যাভিলিয়নে ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি-দ্য ক্রিটিক্যাল ডিকেড’ শীর্ষক বৈঠকে অংশ নেন।
একই দিন অপরাহ্ণে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে তিনি কপ২৬-এর একটি ভিভিআইপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সন্ধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ডপ্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
২ নভেম্বর সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ প্যাভিলিয়নে ‘ওমেন অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। পরে কমনওয়েলথ সংবর্ধনায় যোগ দেন।

বিকেলে প্রিন্স চার্লস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরে তিনি ইউকে মিটিং রুমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং দ্বিপক্ষীয় বৈঠককক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন। তিনি সভাকক্ষ-৪ এ ‘ফোর্জিং এ সিভিএফ কপ২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘ওয়ার্ল্ড লিডার্স সামিট’-এর সমাপনী পর্বেও যোগ দেন।

সন্ধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
স্কটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

৩ নভেম্বর দুপুরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশে গ্লাসগো ত্যাগ করেন। লন্ডনে পৌঁছার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোইলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেখানে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ’, বঙ্গবন্ধুর ওপর সিক্রেট ডকুমেন্টের আন্তর্জাতিক প্রকাশনা এবং লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

৯ নভেম্বর সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেন। একই দিন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পৌঁছার পরপরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিসি প্যালেসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই দিনই তিনি ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সের সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন ম্যাটিগননে বৈঠক করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইউনেসকো সদর দপ্তরে ‘ইউনেসকো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, ইউনেসকোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম এবং ইউনেসকোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সফরের শেষ মুহূর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।