২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু। তারপর কেটে গেছে পাঁচটি বছর। এই পাঁচ বছরে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের মুকুটে যুক্ত হয়েছে নানা সাফল্য আর অর্জন। এই সফলতাকে সঙ্গী করে আজ পুলিশের এই বিশেষ ইউনিট উদযাপন করছে তাদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)।

*সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল*
বাসস জানায়, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করেছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে বৈশ্বিক বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ নানাবিধ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এসব উন্নয়ন ও পরিকল্পনার সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জনমানুষের নিরাপত্তাবোধ। জঙ্গিবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ দমন ও প্রতিরোধ ইতোমধ্যে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম জনসাধারণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ‘সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ দমন ও প্রতিরোধের লক্ষ্যে গঠিত বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট-এটিইউর পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে জেনে আনন্দিত। এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও এটিইউর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান তিনি।

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের দেশপ্রেমিক পুলিশ সদস্যগণ’ উল্লেখ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সেই বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি রুদ্ধ করে দেবার জন্য সৃষ্ট কৃত্রিম সংকটকালীন পরিস্থিতিতে আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি’ ঘোষণা করে, একগুচ্ছ কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। দেশব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদবিরোধী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, অভিযান, মামলা তদন্ত ও জনসচেতনতামূলক কাজসহ কাউন্টার রেডিকেলাইজেশন অ্যান্ড ডিরেডিকেলাইজেশন কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমোদন দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত এই ইউনিট এটিইউ গঠন করেছি। নবসৃষ্ট এটিইউ প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাদের নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, দেশের প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে এটিইউ আরও বিস্তৃত পরিসরে নিরলস কাজ করে যাবে। প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এই সময়ে জঙ্গি ও দেশবিরোধী শক্তির অপতৎপরতা রুখে দিতে এটিইউ নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুগের চেয়ে অগ্রবর্তী ভূমিকা পালন করে জনগণকে সেবা প্রদান করে যাবে, এটাই আমার প্রত্যাশা।

সকলে মিলে আগামী প্রজন্মের জন্য জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে তিনি অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পঞ্চম বর্ষপূর্তির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।