শেরপুরের বিধবাপল্লির বীরাঙ্গনা ও শহীদ জায়াদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

পবিত্র মাহে রমজান এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শেরপুর পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) উদ্যোগে সোহাগপুর বিধবাপল্লিতে বসবাসরত বীরাঙ্গনা ও শহীদ জায়াদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

২৬ মার্চ দুপুরে পুনাক শেরপুরের সভানেত্রী সানজিদা হক মৌর সভাপতিত্বে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম।

বক্তব্য দিচ্ছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আজ এই শহীদ জায়া ও বীরাঙ্গনাদের মাঝে এসেছি। শেরপুর পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী ও আমার সহধর্মিণী সানজিদা হক মৌ ঐকান্তিকভাবেই চাচ্ছিলেন, এই দিনটিতে আপনাদেরকে যেন আমরা স্মরণ করি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু খাদ্যসামগ্রী আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, শেরপুর জেলায় আমার ছয় মাসের কাছাকাছি হতে চলল। এই ছয় মাসে প্রায় পাঁচবারের বেশি আসা হয়েছে এখানে। ইনশা আল্লাহ, যত দিন থাকব, আরও অনেকবারই আসা হবে। আপনাদের দুঃখ-দুর্দশা পুরোপুরি তো আমরা কখনো লাঘব করতে পারব না, তবে সহনশীলতার মধ্য দিয়ে আমরা কিছুটা শরিক হওয়ার চেষ্টা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সরকার আপনাদের জন্য অনেক কিছুই করে যাচ্ছে । যদি এই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের নেত্রী না থাকতেন, আপনাদের অবস্থান কিন্তু আজকের অবস্থায় যতটুকু ভালো আছে, ততটুকু হয়তো থাকতে পারতেন না। যাহোক, আপনারা ভালো থাকবেন, আপনাদের জন্য শুভকামনা। ইনশা আল্লাহ, সামনের দিনগুলোতে আবার দেখা হবে।’

বক্তব্য দিচ্ছেন শেরপুর পুনাকের সভানেত্রী সানজিদা হক মৌ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

পুনাক সভানেত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজ ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। আজকের এই বিশেষ দিনে আপনাদের সাথে দেখা না করলেই নয়।আপনাদের স্বামী-সন্তানসহ আত্মীয়দের ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। ১৯৭১ সালে তাঁদের যে আত্মত্যাগ, সেটা কখনোই ভোলার নয়। আর ৫২ বছর ধরে আপনাদের যে বয়ে চলা কষ্ট, সেই কষ্ট কখনোই সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হবে না, আমাদের চেষ্টা এই কষ্টটাকে কমিয়ে রাখা যাতে আপনাদের জীবনযাপন উন্নত হয়, ভালো হয়।

তিনি বলেন, রমজান মাস চলছে। তাই আজ অল্প কিছু খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি, যাতে রোজার মাসটা আপনাদের একটু ভালোভাবে কাটে। রোজার ঈদের পরে শেরপুর পুনাকের পক্ষ থেকে সোহাগপুর বিধবাপল্লিতে বসবাসরত বীরাঙ্গনা ও শহীদ জায়াদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ সময় মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), শেরপুর; মো. সোহেল মাহমুদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্), শেরপুর; তাহমিনা আক্তার, সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ), শেরপুর; আমিনুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ নালিতাবাড়ী, শেরপুর; এমদাদুল হক, অফিসার ইনচার্জ নালিতাবাড়ী থানা, শেরপুর; সাংবাদিক হাকাম হীরাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।