কুমিল্লার দেবীদ্বারে পাঁচ বছরের একটি মেয়েকে হত্যার অভিযোগে তার বাবাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলছেন, বাবার ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক’ দেখে ফেলায় শিশুটিকে হত্যা করা হয়। খবর বিডিনিউজের।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শিশুটির বাবা আমির হোসেন (২৫), তাঁর চাচাতো ভাই রবিউল আউয়াল (১৯), রেজাউল ইসলাম ইমন (২২), লাইলি আক্তার (৩০) ও সোহেল রানা (২৭)।

বুধবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন বলেন, কুমিল্লার দেবীদ্বারের অটোরিকশাচালক আমির হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় লাইলি বেগমের ‘বিবাহবহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক’গড়ে ওঠে।

গত ৫ নভেম্বর আমিরের সঙ্গে লাইলি আক্তারকে দৃষ্টিকটু অবস্থায় দেখে ফেলে আমিরের মেয়ে ফাহিমা। এরপর সে তার মাকে বিষয়টি জানিয়ে দেবে বলে জানায়। তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে লাইলি বারবার আমিরকে চাপ দিচ্ছিল বিষয়টি সামাল দেওয়ার জন্য। পরদিন আমির তার চাচাতো ভাই ও পূর্বপরিচিত আরও চারজনকে নিয়ে তাঁর মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়।
৭ নভেম্বর মেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয় আমির হোসেন। নিজের অটোরিকশায় করে তাকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে দেবীদ্বার পুরান বাজারের দক্ষিণে নদীতীরের নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়।

র‌্যাব বলছে, একটি ছুরি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন আমির, তাঁর সহযোগী রবিউল আরেকটি ছুরি নিয়ে নদীতীরের ওই নির্জন জায়গায় যান।

শিশুটিকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করেন বাবা আমির হোসেন, এরপর অন্যরা। ছুরিকাঘাতের পরে শ্বাসরোধে শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করেন আমির। এরপর পশুখাদ্য রাখার প্লাস্টিকের বস্তায় শিশুটির লাশ ভরে অটোরিকশায় নিয়ে রওনা দেন।

এদিকে বাড়িতে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ফাহিমার মা বারবার আমিরকে ফোন করছিলেন। আমির তাঁদের ‘ভালো করে’ খুঁজে দেখতে বলেন। ওই রাতে লাশটি ফেলে দেওয়ার কোনো জায়গা না পেয়ে ইমনদের গরু রাখার ঘরে একটি প্লাস্টিকের ড্রামে লাশটি ঢেকে রাখা হয়। দুদিন পর সোহেল রানার অটোরিকশায় করে লাশটি কাচিসাইর এলাকার একটি কালভার্টের নিচে তাঁরা ফেলে আসেন বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি শ্বশুরবাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক নিয়েছিলেন আমির। সেই টাকার বিনিময়েই তিনি মেয়েকে হত্যা করতে অন্যদের দলে টানেন।

ফাহিমা ‘নিখোঁজ’ দাবি করে ওই ব্যক্তিরাই এলাকায় মাইকিং, ঝাড়ফুঁক ও ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন, যাতে তাঁদের কোনোভাবে সন্দেহ করা না হয়।