পুলিশি হেফাজতে গ্রেপ্তার ২ আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

নীলফামারীর ডোমারে আরিফ হোসেন(১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তার করেছে ২ আসামিকে।

জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট বাবার অটোরিকশাসহ ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আরিফ হোসেন(১৪)
নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২৬ আগস্ট সকাল আনুমানিক ১০টার সময় ডোমার থানাধীন বড় রাউতা মাঝাপাড়া এলাকার একটি অব্যবহৃত গভীর নলকূপের ঘর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনাটি দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়।

চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি জানার পর সিআইডির প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম পিপিএমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধরের নেতৃত্বে এলআইসি’র একটি চৌকস টিম ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ভিকটিমের পরিবার ও আশপাশের বিভিন্ন উৎস থেকে ঘটনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়।

পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মো. কহিনুর ইসলাম ওরফে রুবেল(৪০) ও মো. আলমগীর হোসেন ওরফে আলম (৪০) সহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।

সিআইডি’র এলআইসি’র চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে আজ ২৭ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে কহিনুর ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কহিনুর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান যে, ১৯ আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টার সময় অপর দুই সহযোগীসহ তারা ডোমার কলেজ গেইটের পাশে মাদ্রাসা মোড় হতে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানা এলাকায় যাওয়ার জন্য ১৫০ টাকা ভাড়ায় যাত্রীবেশে ভিকটিম আরিফ হোসেনের অটো রিকশায় ওঠেন। তারা বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে দোলাবাড়ী নামে একটি নির্জন স্থানে যাওয়ার পর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে ভিকটিমকে অটোরিকশাটি থামাতে বলেন। এরপর তারা ভিকটিমকে জোর করে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে অটোটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন ভিকটিম বাধা দিলে তারা তাকে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ভিকটিম প্রায় অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে সবাই মিলে তাদের কাছে থাকা ধারালো ছুরি/চাকু দিয়ে তার গলায় আঘাত করে হত্যা করে মৃতদেহটি পাশের অব্যবহৃত গভীর নলকূপের ঘরে মরিচের শুকনা গাছ দিয়ে ঢেকে রেখে অটোরিকশা নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

পরে চুরি করা অটোরিকশাটি কহিনুর বন্ধু আলমগীরের সহযোগিতায় তার এক আত্মীয়ের কাছে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ডোমার থানায় চুরি ও দস্যুতার একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আরিফ হোসেন হত্যার ঘটনায় তার বাবা আনোয়ার হোসেন (৫৫) ডোমার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।