ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার) পিপিএম (বার) বলেছেন, পুলিশ যেমন প্রয়োজন জীবন বাঁচাতে, ঠিক তেমনই সংস্কৃতির প্রয়োজন হয় জীবন সাজাতে। জীবন বাঁচাতে ও জীবন সাজাতে নাগরিক জীবনের সব ক্ষেত্রেই পুলিশের অবস্থান রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন। রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ২৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবের সভাপতি ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)–এর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ পুলিশ এ ধরনের আয়োজন করল।
ডিএমপির কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুই লাখের বেশি পুলিশ সদস্য দিনরাত ২৪ ঘণ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, বাংলাদেশ পুলিশের সেবা কেবল আইনশৃঙ্খলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেটি তারা দেখিয়েছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে, ২০১৩ সালে ও পরে করোনাকালে। চলমান হিটওয়েভসহ যেকোনো দুর্যোগে জীবন বাজি রেখে জনসাধারণের সেবা দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি তাঁরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পুলিশ চেয়েছিলেন, আজকের বাংলাদেশ পুলিশ সেই পুলিশে পরিণত হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে ও জীবন সাজাতে সব ক্ষেত্রে পুলিশের অবস্থান, সেই প্রতিজ্ঞা নিয়েই আজকে আমাদের এই প্রতিযোগিতার আয়োজন।’
নজরুলসংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নজরুলসংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ, বিশিষ্ট নজরুলসংগীতশিল্পী ও নজরুল গবেষক সুজিত মোস্তফা এবং প্রথিতযশা কণ্ঠশিল্পী চন্দনা মজুমদার।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের লক্ষাধিক প্রতিযোগীর মধ্য থেকে বাছাই করা ১৫৫ জন প্রতিযোগী ১০টি ক্যাটাগরিতে চূড়ান্ত বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন। ২৫ এপ্রিল শুরু হওয়া এই বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা শেষ হবে ২৭ এপ্রিল (শনিবার)। প্রতিযোগিতায় মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল আরটিভি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান বিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার), বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করার জন্য ১৯৮৬ সালে তৎকালীন ইন্সপেক্টর জেনারেল এ আর খন্দকার ১০ জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সাংস্কৃতিক পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম পিপিএম ও উপপুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান (হেডকোয়ার্টার্স) (বর্তমানে ডিএমপি কমিশনার) এই পরিষদকে বাংলাদেশ পুলিশ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ হিসেবে নামকরণ করেন। পরে এটিকে পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাব নামকরণ করা হয়।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সুকুমার মনোবৃত্তি ও সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের সংগঠন হলো বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাব। মোট ৮০ জন শিল্পী ও কলাকুশলী এই ক্লাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি এ সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন নাটক ও নাচ-গানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।