নরসিংদীতে পুলিশের হেফাজতে প্রতারক চক্রের গ্রেপ্তার হওয়া হোতা পপি (মাঝে)

নরসিংদী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা একটি প্রতারক চক্রের হোতা শাহনাজ আক্তার পপিকে গ্রেপ্তার করেছে। এই চক্র পুরুষদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে মারধর করত এবং পরে টাকার বিনিময়ে মুক্তি দিত।

জানা যায়, ১৭ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর মনোহরদী থানার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগলিপড়া এলাকার রূপচানের খড়ের গাদার উত্তর পাশ থেকে ২০-২৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এরপর নরসিংদী জেলা পুলিশ তদন্তে নামে এবং লাশের পরিচয় উদঘাটন করে। জানা যায়, তাঁর নাম মো. মিঠু হোসেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়পুরে। তিনি কলেজে পড়ার পাশাপাশি অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।

পুলিশের তদন্তে আরও জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর থানার বাসিন্দা শাহনাজ আক্তার পপি (২৮) ও পলাতক আসামি হানিফসহ ৩/৪ জনের একটি প্রতারক চক্র নানা অপরাধমূলক কাজে সক্রিয় ছিল। তারাই মিঠু হোসেনকে হত্যা করেছে।

দলনেতা শাহনাজ আক্তার পপি ছদ্মনাম ব্যবহার করে নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন সুন্দরী মেয়ের ছবি দিয়ে একাধিক ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন পুরুষকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে প্রথমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতেন, পরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দেখা করতে বলতেন। এসব পুরুষ দেখা করতে গেলে সহযোগী হানিফসহ প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যরা তাঁদের আটকে রেখে মারধর করতেন এবং একসময় মুক্তিপণ দাবি করতেন।

এমনিভাবে মো. মিঠু হোসেনের সাথে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মনোহরদীতে দেখা করার জন্য ডাকেন পপি। মিঠু হোসেন মনোহরদীতে এলে পপি কৌশলে তাঁর সহযোগী হানিফসহ অন্যদের হাতে তুলে দেন। তাঁরা শিবপুর মডেল থানাধীন আশুটিয়া পূর্বপাড়ার গোপন জায়গায় আটকে রেখে মিঠুকে মারধর করেন এবং তাঁর অভিভাবকের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মিঠুকে হত্যা করে তাঁর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মনোহরদী থানাধীন একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগলিপাড়ার রুপচানের খড়ের গাদার উত্তর পাশে ফেলে রাখেন।

মিঠুর লাশ উদ্ধার হওয়ার পর পুরো ঘটনাটি নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, পিপিএমের সার্বিক দিকনির্দেশনায় নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা শাখা এই হত্যারহস্য উদঘাটন করে উল্লিখিত প্রতারক চক্রের মূল হোতা শাহনাজ আক্তার পপিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।বাকি সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলমান আছে।

এ ঘটনায় রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মনোহরদী থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।