চাঁন মিয়া হত্যা মামলার গ্রেপ্তার আসামি মো. মকিদুল শেখ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

দীর্ঘ ৭ বছর পর নড়াইলের ভ্যানচালক চাঁন মিয়া হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে যশোর পিবিআই।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামি মো. মকিদুল শেখকে (৩৭) গত রোববার তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৮ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার সময় চাঁন মিয়াকে কে বা কারা ডাক দিলে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে যান। পরদিন সকাল ৭টার দিকে বাড়ির পূর্ব পাশের মেহগনিবাগানের মধ্য থেকে চাঁন মিয়ার মৃতদেহ গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. উজ্জ্বল শেখ (৩০) সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। নড়াইল সদর থানা-পুলিশ মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের নড়াইল সদর থানায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে বাদীর নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য নড়াইল জেলার সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

আদালতের নির্দেশে সিআইডি মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর নড়াইল সদর থানায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে বাদীর নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি আরও অধিকতর তদন্তের জন্য যশোর পিবিআইকে নির্দেশ দেন ।

আদালতের নির্দেশে গত ৭ মার্চ মামলাটি পিবিআই গ্রহণ করে এবং মামলার তদন্তভার এসআই মিজানুর রহমান-২ এর ওপর অর্পণ করা হয়। তিনি যথারীতি মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন এবং তদন্তের জন্য তৎপর হন। এরপর যশোর পিবিআইয়ের একটি চৌকস দল গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় অভিযুক্ত মো. মকিদুল শেখকে (৩৭) তাকর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই মামলার ভিকটিম চাঁন মিয়া ও অভিযুক্ত মো. মকিদুল শেখের বাড়ি একই গ্রামে। অভিযুক্ত মকিদুলের ছোট ভাই একাদুলের স্ত্রীর সাথে চাঁন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে একাধিকবার চাঁন মিয়াকে জরিমানা করা হয়। চাঁন মিয়ার প্রেম থাকার কারণে তাঁর স্ত্রী তাঁকে তালাক দিয়ে চলে যান। একাদুলের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে অভিযুক্ত মো. মকিদুল শেখসহ অন্য অভিযুক্তরা চাঁন মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরপর চাঁন মিয়াকে তাঁর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে গলায় একটি রশি পেঁচিয়ে গভীর রাতে তাঁর বাড়ির পূর্ব পাশে মেহগনিবাগানের মধ্যে ফেলে রেখে যান মর্মে স্বীকার করেন।

এরপর গ্রেপ্তার অভিযুক্ত আসামি মো. মকিদুল শেখকে গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।