প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

দিনাজপুর ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে জনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ এবং সিডিআর অ্যানালাইসিস-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

শনিবার (৭ মে) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বিপিএম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিপিএম, পিপিএম (বার) এবং দিনাজপুর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় পিপিএম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান পিপিএম। অনুষ্ঠানে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ডিজিটাল পুলিশিং ব্যবস্থাপনায় সিডিআরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর অপরাধ এবং অপরাধীদের যথাযথভাবে আইনের হাতে সোপর্দ করার জন্য সিডিআর-সংক্রান্ত দক্ষতা অপরিহার্য। সঠিক অপরাধী শনাক্ত করতে বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তের জন্য প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের সিডিআরের জ্ঞান অত্যাবশ্যক।

এ সময় দেবদাস ভট্টাচার্য্য প্রত্যেক তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডিআর-সংক্রান্ত সুগভীর জ্ঞান অর্জনের নির্দেশ দেন।

জনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে পুলিশের সব সদস্যের প্রতি আইনানুগ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, জনশৃঙ্খলা রক্ষা করা পুলিশের অন্যতম প্রধান গুরুদায়িত্ব। আইনের শাসন সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সামাজিক শৃঙ্খলা একটি অপরিহার্য উপাদান। সামাজিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হলে অবশ্যই পুলিশকে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সর্বদা মানবিক, সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সব ধরনের সেবাকে জনমানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। এ সময় সব পুলিশ সদস্যকে সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধ বজায় রেখে মানুষকে পুলিশি সেবা দেওয়ার আহ্বান জানান।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় পিপিএম অপরাধ এবং অপরাধী শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সিডিআরের অপরিহার্যতা তুলে ধরেন এবং সকল পুলিশ সদস্যকে এ-সংক্রান্ত প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জনের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, জনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা পুলিশের একটি নৈমিত্তিক কাজ। এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এর জন্য দরকার কঠোর প্রশিক্ষণ। মানবিক মূল্যবোধ এবং পেশাদারত্বের সমন্বয় ঘটিয়ে জনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার জন্য তিনি প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থী এবং অতিথিবৃন্দের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মমিনুল ইসলাম। তিনি প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিবৃন্দকে স্বাগত জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান পিপিএম প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে বলেন, প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। পুলিশিং একটি পবিত্র সেবামূলক কাজ। এই মহান দায়িত্ব পালনের জন্য অবশ্যই আমাদেরকে সুশিক্ষিত এবং সুপ্রশিক্ষিত হতে হবে। মানুষের প্রতি মানবিক এবং আইনি দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পুলিশের সেবাকে জনবান্ধব, জনকল্যাণমূলক এবং সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা ও পেশাদারত্ব প্রদর্শন করতে হবে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যকে সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও পেশাদারত্বের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের পুলিশ বিনির্মাণের আহ্বান জানান।