দলমত নির্বিশেষে সবার ঠিকানাই তাঁর সরকার নিশ্চিত করবে উল্লেখ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করাই তাঁর দায়িত্ব। খবর বাসসের।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সারা দেশে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে আরও ২৬ হাজার ২২৯টি ঘরসহ জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন। পাশাপাশি, পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবেও ঘোষণা দেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দল-মত, আদর্শের ভিন্নতা থাকলেও মানুষের বড় পরিচয় সে মানুষ এবং সেভাবেই তিনি মানুষকে বিবেচনা করেন।’ তিনি বলেন, ‘কারো কাছে যদি খবর থাকে বাংলাদেশের একটি মানুষ ভূমিহীন বা গৃহহীন রয়েছে, অবশ্যই আমাদের খবর দেবেন। দল মত নির্বিশেষে যেই গৃহহীন থাকবে আমরা তাদেরকেই ঘর করে দেব, ঠিকানা এবং জীবিকার ব্যবস্থা করে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘দল মতের ভিন্নতা থাকতে পারে তাতে কিছু এসে যায় না। দেশটাতো আমাদের। আর আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, তার মানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব আমার।’

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষকে আমি মানুষ হিসেবেই দেখি এবং প্রত্যেকটি মানুষ সুন্দর ভাবে বাঁচবে সেটাই আমি চাই। আমার বাবার সেটাই শিক্ষা। যে কারণে এদেশের প্রত্যেকটি মানুষের আমি সুন্দর জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়ে যেতে চাই।

তাঁর সরকারের পদক্ষেপের ফলে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবকটি উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলা সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত হওয়ার সাফল্য তুলে ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি, আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলার প্রত্যেকটি উপজেলাকেই এভাবে ভূমিহীন গৃহহীন মুক্ত করতে পারবো। প্রত্যেকের একটি ঘর থাকবে, একটি স্থায়ী ঠিকানা থাকবে, একটি সুন্দর বাসস্থান থাকবে এবং তাঁরা সুন্দরভাবে বাঁচবে। আর ইনশা আল্লাহ সেটা আমরা করে ফেলতে পারবো বলেই বিশ্বাস করি।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠনসহ সকল রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী, জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন নিজ নিজ গ্রামে বা এলাকায় কোন ভূমিহীন বা গৃহহীন রয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখার আহ্বান জানান, সরকার তাদের ঘর নির্মাণ করে দেবে।

অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পাঁচটি জেলার পাঁচটি স্থানের সাথে সংযুক্ত থেকে উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন। স্থানগুলো হচ্ছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেড়ামারা আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড়ের পঞ্চগড় সদর উপজেলার মহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রকল্পের উপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন এবং এর পরেই একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।