প্রতিটি থানায় স্থাপন করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ডেস্কের উদ্বোধন করবেন ১০ এপ্রিল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মুজিববর্ষে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের প্রতিটি থানায় একটি গৃহহীন পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণ এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক স্থাপনের মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল ১০ এপ্রিল গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি গৃহ হস্তান্তর এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক উদ্বোধন করবেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে প্রতিটি থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি করে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেই বাড়ি ১০ এপ্রিল হস্তান্তর করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজারবাগ প্রান্তে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইনস, পীরগঞ্জ থানা এবং মাগুরা সদর থানা সরাসরি অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের সব থানা ও সব পুলিশ লাইনস প্রান্ত ওয়ানওয়ে সংযুক্ত থেকে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করবে। বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান বিপিএম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিটি থানায় স্থাপন করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ডেস্কের উদ্বোধন করবেন ১০ এপ্রিল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষে ঘোষণা করেছিলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে পুলিশ গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ করেছে। এ কর্মসূচির আওতায় ৫১৯টি থানায় ৫২০টি গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কাল ৪০০টি গৃহ হস্তান্তর করা হবে। ৪১৫ বর্গফুট আয়তনের দৃষ্টিনন্দন প্রতিটি গৃহ পরিবেশবান্ধব নির্মাণসামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে প্রতিটি থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি করে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেই বাড়ি ১০ এপ্রিল হস্তান্তর করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

গৃহহীন পরিবার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত, প্রতিবন্ধী ও উপার্জনে অক্ষম, অতিবৃদ্ধ ও পরিবারে উপার্জনক্ষম সদস্য নেই, এমন পরিবার অথবা অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল পুলিশ। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেসব পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় কিছু অর্থ বেঁচে যায়। সেই অর্থ দিয়ে গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আবাসন কার্যক্রমে শামিল হয় বাংলাদেশ পুলিশ।

প্রতিটি থানায় স্থাপন করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ডেস্কের উদ্বোধন করবেন ১০ এপ্রিল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি থানায় স্থাপন করা হয়েছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক। দেশের ৬৫৯টি থানায় একটি বিশেষ কক্ষ নির্মাণ অথবা প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

সার্ভিস ডেস্ক পরিচালনার জন্য একজন সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে প্রশিক্ষিত নারী পুলিশ সদস্যদের পদায়ন করা হয়েছে। সার্ভিস ডেস্ক কর্মকর্তা থানায় আগত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সমস্যা মনোযোগসহকারে শুনে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করে থাকেন।

মুজিববর্ষের সূচনালগ্ন ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সার্ভিস ডেস্ক পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮১ হাজার ৪৭৬ জন নারী, ৩২ হাজার ২৮৬ জন শিশু, ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩২৫ জন পুরুষ এবং ১১ হাজার ৮১ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, মোট ৩ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৮ জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে এই ডেস্ক থেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশকে জনগণের পুলিশ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ পুলিশ মানবিকতায় উজ্জীবিত হয়ে প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন এবং গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ করেছে, যা জনবান্ধব পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।