আইনি সহযোগিতা পেতে থানায় আসা সাধারণ মানুষও অপেক্ষমাণ সময় বই পড়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন। গতকাল ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় । ছবি: সংগৃহীত

অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনায় অনেক সময় কাউকে কাউকে আসামি হয়ে থানায় যেতে হয়। থানার কয়েদখানায় বন্দী সময় যেন কাটতেই চায় না। আবার আইনি সহযোগিতা পেতে থানায় এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় অনেককে। যাঁরা এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবেন, তাঁদের জন্য বই পড়ে সময় কাটানোর ব্যবস্থা চালু করেছে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানা।

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহমদ ভুঞা গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কোতোয়ালি মডেল থানার সাধারণ মানুষের অপেক্ষা কক্ষের ভেতর ‘বুক কর্নারের’ উদ্বোধন করা হয়েছে। দুটি শোকেসে সাজানো এ ‘বুক কর্নারে’ বর্তমানে ৪০০টি বই রাখা হয়েছে। খবর প্রথম আলোর।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, কয়েক মাস আগে এক রাতে থানায় আটক থাকা এক ব্যক্তি সময় কাটানোর জন্য বই পড়তে চান। কিন্তু থানায় কোনো বই না থাকায় তাঁকে বই দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ঘটনা থেকেই থানার ভেতর বই রাখার চিন্তা মাথায় আসে। নানা অপরাধমূলক কাজের জন্যই মানুষকে থানায় আটক করে রাখা হয়। যাঁদের রাতে আটক করা হয় তাঁদের আদালতে না নেওয়া পর্যন্ত পুরো রাত কয়েদখানায় থাকতে হয়। এটা অনেকের জন্য খুব অস্থিরতার জায়গা। এ সময় সহজে ঘুম আসে না। তাই ওই সময় বই পড়ার ব্যবস্থা থাকলে হয়তো অনেকের ভালো সময় কাটবে। এ ছাড়া আইনি সহযোগিতা পেতে থানায় আসা সাধারণ মানুষও অপেক্ষমাণ সময় বই পড়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় গিয়ে দেখা যায়, অপেক্ষা কক্ষের ভেতর দুটি শোকেসে বই রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, গল্প, কবিতা-উপন্যাসসহ বিভিন্ন ধরনের বই আছে সেখানে। মুঠোফোন হারিয়ে যাওয়ায় রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে এসেছেন তরুণ মেহেরুল্লাহ ইমরান। থানায় বই পড়ার সুবিধা চালুর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আসার পর বই দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। বইগুলো দেখতে দেখতে সময়কুটুও ভালো কেটেছে। এ উদ্যোগ প্রশসংনীয়।’

ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, থানায় আইনি সহায়তা নিতে আসা মানুষ সরাসরি তাক থেকে বই নিয়ে পড়তে পারবেন। তবে আটক থাকা ব্যক্তিরা চাইলে তাঁদের বই সরবরাহ করা হবে। এ ক্ষেত্রে একটি নিবন্ধন খাতা চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা নিজেদের বাড়িতে নিয়েও এসব বই পড়তে পারবেন। বই পড়া শেষে আবার সেটা ফেরত দিতে হবে। ভবিষ্যতে বইয়ের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।