সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার মো. লাল চাঁদ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে তালাবদ্ধ ঘর থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত করে এর রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

২৭ আগস্ট কোনাবাড়ী থানাধীন পুকুরপাড় (পল্লী বিদ্যুতের পাশে) একটি ৫ তলা বাড়ির নিচতলায় তালাবদ্ধ ১টি রুমের ভেতর থেকে মোসা. রিনা খাতুন (৩৮) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়।

এরপর সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম, পিপিএম, অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর
জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তী সময়ে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভিকটিমের স্বামী মো. লাল চাঁদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।

এরপর এলআইসির একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে ২৮ আগস্ট দিবাগত রাতে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানাধীন মাধবপাশা এলাকা মো. লাল চাঁদকে (৪০) গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিনি এবং রিনা খাতুন
গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী থানাধীন তিতাস গার্মেন্টসে কাজ করতেন। ২৭ আগস্ট শনিবার সকাল ৬টায় তিনি তাঁর স্ত্রী রিনা খাতুনকে কোনাবাড়ীর নামাপাড়ায় জনৈক নজরুলের ভাড়া বাসা থেকে কবিরাজ দেখানোর কথা বলে
কোনাবাড়ী থানাধীন পুকুরপাড়ে ওই ৫ তলা বাড়ির নিচতলার ১টি রুমে নিয়ে যান। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে তিনি তাঁর স্ত্রীকে সজোরে লাথি মেরে ঘরের দরজার বাইরে থেকে ছিটকানি আটকে বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তিনি ঘরে ফিরে এসে দেখতে পান, স্ত্রীর মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে পড়ে আছেন।
রিনা খাতুন মারা গেছেন এটা বুঝতে পেরে তিনি পালিয়ে যান।

ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের ভাই মো. আব্দুস সালামের (৫১) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনাবাড়ী থানায় মামলা করা হয়।

এমন নির্মমভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার সিআইডি তথা বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।