জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট (রক্ত ও প্রস্রাবে মাদকের উপস্থিতি আছে কি না তার পরীক্ষা) বাধ্যতামূলক করেছে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে মন্ত্রণালয়ের চিঠি না পাওয়ায় শহরের অন্য কোনো সরকারি কলেজে ডোপ টেস্টের শর্তারোপ করা হয়নি। এমনকি উপজেলা পর্যায়ের কলেজগুলোতেও নয়। খবর সমকালের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২ জুন ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ষষ্ঠ সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর তা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গত ২৯ আগস্ট দেশের সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের প্রধান ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠানো হয়। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই চিঠি কলেজগুলোয় এখনো পৌঁছায়নি। ফলে অধিকাংশ কলেজই অনার্সে ভর্তি-ইচ্ছুকদের ডোপ টেস্ট করাচ্ছে না।

এবার ২ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোয় অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি শুরু হয়েছে। চলবে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে কলেজগুলোয় মূলত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ভর্তি শুরু হয়েছে।

এদিকে ডোপ টেস্ট সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা এবং ভর্তির জন্য হাতে খুব কম সময় থাকায় আজিজুল হক কলেজে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। তাঁরা বলছেন, এমনিতেই ভর্তির জন্য হাতে সময় খুব কম, তার ওপর একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ডোপ টেস্ট করাতে গিয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি পরীক্ষা করাতে গিয়ে বাড়তি ৯০০ থেকে আড়াই হাজার টাকাও গুনতে হচ্ছে।

বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘যেহেতু আমরা কোনো লিখিত নির্দেশনা পাইনি, তাই শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট ছাড়াই ভর্তি করাচ্ছি। তবে তাদের আগামীতে ওই পরীক্ষা করাতে হবে বলে মৌখিক নির্দেশনা দিচ্ছি।’

একই ধরনের মন্তব্য করে সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আপাতত ডোপ টেস্ট করাচ্ছি না। তবে আগামীতে করতে বাধ্য থাকবে- এমন একটি অঙ্গীকারনামা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছি।’

সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহজাহান আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় ডোপ টেস্ট করানোর বিষয়ে সরকার যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই তাঁরা এর প্রয়োগ শুরু করেছেন।