গ্রেপ্তার ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা টাকা।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮৫ লাখ টাকা ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। খবর ডিএমপি নিউজের।

গ্রেপ্তার ডাকাতেরা হলেন সোহাগ মাঝি, মো. দেলোয়ার, মো. জয়নাল হোসেন, মো. সোহেল, মো. জনি ও মো. আজিজ । এ সময় তাঁদের হেফাজত থেকে ২০ লাখ টাকা, ১টি মাইক্রোবাস এবং ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।

গতকাল শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ডিএমপির গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএমের নেতৃত্বে কোতোয়ালি জোনাল টিম রাজধানীর দিয়াবাড়ী ও কাজলা এলাকা, ঢাকা জেলার সাভার থানা এবং পটুয়াখালী সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

তিনি জানান, ১৩ নভেম্বর বেলা দেড়টায় কেরানীগঞ্জ থানার জনৈক ব্যবসায়ী তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাগে করে ৮৫ লাখ টাকা নিয়ে পিকআপ যোগে আব্দুল্লাপুরের সাউথইস্ট ব্যাংকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ব্যবসায়ীর গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। এরপর ডাকাতেরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।

ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ডাকাত দেলোয়ার হোসেনকে রাজধানীর মিরপুর দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর তথ্যমতে সাভার থানার কাউন্দিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপর তিনজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ডাকাতদের দেওয়া তথ্যমতে পটুয়াখালী সদর থানা এলাকা ডাকাত দলের সর্দার সোহাগ মাঝিকে ডাকাতির কাজে ভাগে প্রাপ্ত ১৯ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ডাকাতদের তথ্যমতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি মোটরসাইকেল এবং ডাকাতির কাজে ভাগে প্রাপ্ত ১ লাখ টাকাসহ আরও একজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডাকাতদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ডাকাতি করার জন্য বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ডিবি/পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান করেন। ব্যবসায়ীসহ আর্থিক লেনদেনকারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন। যেসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই এ রকম নিরিবিলি জায়গায় সুযোগ বুঝে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদেরকে গতিরোধ করেন। ভিকটিমদের নামে মামলা/ওয়ারেন্ট আছে বলে টাকার ব্যাগসহ গাড়িতে তুলে নেন। ডাকাতেরা তাঁদের সুবিধামতো জায়গায় টাকা/ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে নির্জন এলাকা, রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। ডাকাতির কাজে তাঁরা হ্যান্ডকাফ, ওয়্যারলেস ও খেলনা পিস্তল ব্যবহার করতেন।

এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেনের সময় ব্যবসায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নিকটস্থ থানায় অবহিত করার জন্য পুলিশের এই কর্মকর্তা পরামর্শ দেন।