সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি : ডিএমপি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের অভিযানে মানব পাচার চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া এক অপহৃত যুবককে লিবিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপি জানায়, সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকা থেকে আসামি বাদশা (৩১) ও রাজিব মোল্লাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী মো. সফিকুল ইসলাম ওরফে শফিউল্লা শেখকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ৪ অক্টোবর দুবাই পাঠান আসামি বাদশা। অপর আসামি রাজিবের আত্মীয় সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য সবুজ আগে থেকেই দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। পরে দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে ভুক্তভোগীসহ আরও ২০ জনকে একটি বাসায় নিয়ে যান সবুজ।

ডিবিপ্রধান বলেন, পরে ভুক্তভোগীকে দুবাই থেকে সিরিয়া হয়ে লিবিয়ার মিসরাতা শহরের এলাকার একটি ক্যাম্পে নেওয়া হয়। বাদশা ও রাজিবের বোনের স্বামী সুলতানের নেতৃত্বে ভুক্তভোগীকে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর কান্নার শব্দ শুনিয়ে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

ডিবিপ্রধান বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার নিরুপায় হয়ে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের শরণাপন্ন হয়। পরে যাত্রাবাড়ী থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা হয়। একপর্যায়ে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের বাদশা ও রাজিব মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মাধ্যমে লিবিয়ায় অবস্থান করা সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য সুলতানের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভুক্তভোগী মো. সফিকুল ইসলামকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, বেকার যুবক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ইতালি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ায় পাচার করতেন। বিদেশে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের ক্যাম্পে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। পরে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হতো।

অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার প্রলোভনে পড়ে কাউকে টাকা না দেওয়ার অনুরোধ জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।