ঠাকুরগাঁওয়ে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ঠাকুরগাঁওয়ে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মামলার আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ নিয়ে ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) প্রেস ব্রিফিং করেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।

গ্রেপ্তার আসামিদের নাম মো. মেহেদী হাসান (১৯), মো. আব্দুল কাদের (৩০), মো. সাদেকুল ইসলাম ওরফে মোজাম্মেল হক মজু (২৪), মো. নূর আলম ওরফে মংলা (১৯), মো. মামুন ওরফে বোবা (১৮), মো. সোহেল রানা (১৮), হিমু (২৬), মো. মহিরুল ইসলাম (৪০), মো. সজল (২৪) ও মো. মাহাবুব হোসেন (২০)। তাদের মধ্যে মহিরুল, সজল ও মাহাবুব চোরাই ইজিবাইক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ৩০ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর থানার ধীরগঞ্জ বাজার এলাকায় একটি ইজিবাইক ছিনতাই হয়। রাকিব (১৫) নামের একজন ইজিবাইক চালককে যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারী চক্রের চার সদস্য ভাড়া করে হরিপুর ও রাণীশংকৈল থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ছিনতাইকারী চক্রটি হরিপুর থানার আমগাঁও ইউনিয়নের ভেটনা হয়ে যাদুরাণীগামী রাস্তায় অটোচালকের হাত-পাঁ বেধে মুখে রুমাল দিয়ে রাস্তার পার্শ্বে ভুট্টা খেতে ফেলে ইজিবাইকটি নিযে যায়। পরে হিমু নামের একজন ব্যক্তি ইজিবাইক চালকের বাবার কাছ থেকে ইজিবাইকটি ফেরত দেয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। অটোচালক রাকিবের বাবা দুই দফায় ওই ব্যক্তিকে ১৫ হাজার টাকা দেন। তারপরও ইজিবাইক ফেরত না পাওয়ায় তিনি হরিপুর থানায় মামলা করেন।

এরপর গত ৪ মার্চ রাণীশংকৈল থানার রামরাই দীঘির পাশের ভুট্টাক্ষেতে একটি অর্ধগলিত অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যায়। পরে জানা যায়, লাশটি মো. সাইফুল্লাহর (১৫)। এ নিহত কিশোরের বাবা মো. নুর ইসলাম রাণীশংকৈল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনার সঙ্গে হরিপুর থানার মামলাটির সামঞ্জস্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। ঘটনার গুরত্ব বিবেচনায় ঠাকুরগাঁও জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), রাণীশংকৈল থানা ও হরিপুর থানা যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। হরিপুর থানার মামলার ঘটনায় চাঁদা দাবিকারী ব্যক্তি হিমুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হরিপুর থানার মামলার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। এর ধারাবাহিকতায় অন্যান্য আসামীদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে রাণীশংকৈল থানার ক্লুলেস মামলাটির সম্পূর্ণ রহস্য উন্মোচিত হয়। মামলা তদন্তে উভয় ঘটনায় ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক দুটি উদ্ধার করা হয় এবং উভয় ঘটনার সহিত জড়িত ইজিবাইক ছিনতাইকারী চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছিনতাইকারীদের দেওয়া তথ্যমতে হরিপুর থানার মামলার ঘটনায় ছিনতাই হওয়া ভিকটিমের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে।