মামলা দায়েরের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার চাঞ্চল্যকর অটোরিকশাচালক নাজমুল হোসেন (১৭) হত্যার মামলার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামি মো. মামুন ওরফে মাসুমকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই জামালপুর জেলা।

গতকাল ১৪ মার্চ রাত আনুমানিক ১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া এলাকার জনৈক আসাদুল্লাহর ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মো. মামুন ওরফে মাসুম ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম নাজমুল হোসেন (১৭) জামালপুরের মেলান্দহ থানার দক্ষিণ মহিরামকুল গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে। সে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত।

প্রতিদিনের মতো ভিকটিম নাজমুল ১১ মার্চ রাত ৮টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। সকাল হলেও সে বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করে। ১২ মার্চ সকাল ৭টায় খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা লোকমারফত জানতে পারেন যে, মেলান্দহ থানাধীন বাগবাড়ী হাইস্কুলের দক্ষিণ পাশে পুকুরে একটি অটোরিকশা পড়ে আছে। তখন তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অটোরিকশা শনাক্ত করেন।

১২ মার্চ বেলা আনুমানিক ১১টায় ভিকটিমের পরিবারের লোকজন জানতে পারেন যে, মেলান্দহ থানাধীন রেখিরপাড়া গ্রামে মরগাঙ্গি বিলের পূর্ব পাশের কিনারে একজনের লাশ পানিতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পাওয়া গেছে এবং স্থানীয় লোকজন লাশটি পানি থেকে ওপরে তুলেছে। খবর পেয়ে ভিকটিমের বাবা ও তার পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে ভিকটিম নাজমুলের লাশ শনাক্ত করেন।

লাশ পাওয়ার সংবাদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পিবিআই, জামালপুর জেলা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে।

পরে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে পিবিআই জামালপুর জেলা স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।

পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএমের দিক নির্দেশনায় এবং পিবিআই জামালপুরের ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার এম.এম. সালাহ উদ্দীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মো. সাখাওয়াত হোসেন শাহীন সংগীয় অফিসার ও ফোর্সসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ মার্চ রাত দেড়টার দিকে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামি মাসুমকে গ্রেপ্তার করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানান, জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানাধীন মহিরামকুল মোড় হতে গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে ২০০ টাকায় ভাড়া নির্ধারণ করে ভিকটিম নাজমুলের অটোরিকশা করে জুয়া খেলার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। পথে রেখিরপাড়া গ্রামের মরগাঙ্গি বিলের ফাঁকা জায়গায় গিয়ে নাজমুল হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরগাঙ্গি বিলের কিনারে কচুরিপানার ভেতর ফেলে রাখেন।

পিবিআই জামালপুর জেলার পুলিশ সুপার এম. এম. সালাহ উদ্দীন বলেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা আসামি মাসুমকে গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।”