সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

সিলেটের জাফলংয়ে পর্যটক আলে ইমরান হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে গোয়াইনঘাট থানা-পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বুধবার (১৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে আসামি নাদিম আহমেদ নাঈম (১৯) এবং রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আসামি খুশনাহারকে গ্রেপ্তার করা হয়। খুশনাহার নিহত ইমরানের স্ত্রী। অপর আসামি মাহিদুল হাসান মাহিন (২৪) পলাতক রয়েছেন।

তিনি জানান, গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে গোয়াইনঘাট থানাধীন জাফলংয়ের বল্লাঘাট রিভারভিউ রিসোর্টের পাশে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত করে জানা যায়, মৃত ব্যক্তির নাম আলে ইমরান (৩২)। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী থানা এলাকায়। পরের দিন মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করা হয়। তদন্তের একপর্যায়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও গোয়াইনঘাট থানা-পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ সুপার জানান, পাঁচ বছর আগে ইমরানের সঙ্গে খুশনাহারের বিয়ে হয়। দুই বছর আগে আসামি মাহিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে খুশনাহারের। এরপর বিভিন্ন সময় ইমরানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তাঁরা।

এরই ধারাবাহিকতায় বেড়ানোর কথা বলে ১৫ এপ্রিল স্বামী ইমরানকে নিয়ে সিলেটে আসেন খুশনাহার। অন্যদিকে আসামি মাহিন ও তাঁর সহযোগী নাদিম ঢাকা থেকে সিলেটে আসেন। পরের দিন ১৬ এপ্রিল জাফলংয়ের বল্লাঘাট রিভারভিউ রিসোর্টে ওঠেন স্বামী-স্ত্রী। পাশের একটি হোটেলে ওঠেন মাহিন ও নাদিম।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের আগে কৌশলে হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন খুশনাহার। রাত ১০টার দিকে কৌশলে ইমরানকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন তিনি। মধ্যরাতের দিকে খুশনার ও মাহিন শ্বাসরোধে ইমরানকে হত্যা করেন। এরপর লাশ রিসোর্টের পাশে পাথরচাপা দিয়ে রাখেন। ভোরের দিকে সেখান থেকে পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।