জাতিসংঘ সম্মেলনে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে মহাসাগর, সাগর ও সামুদ্রিক সম্পদের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) ১৪ এর সকল লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। খবর বাসসের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) লিসবনে দ্বিতীয় জাতিসংঘ মহাসাগর সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশের বিবৃতি প্রদানের সময় এ মন্তব্য করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, পর্তুগালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান ও প্রতিনিধি দলের অন্যান্য কর্মকর্তারা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘অবৈধ, অনবহিত এবং অনিয়ন্ত্রিত (আইইউইউ) মাছ ধরা বন্ধ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মোট প্রায় ৮.৮% এলাকাকে সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করেছে এবং ২০১৯ সালে জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।’ তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় বাংলাদেশ প্রতিবেশী উভয় দেশের সাথে সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধান করেছে এবং যৌথভাবে সম্পদ কাজে লাগাতে প্রস্তুত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দারিদ্র্য দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখা, বিশ্বের সামুদ্রিক পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দূষণ সম্পর্কে পূর্বাভাস প্রদান ও পদক্ষেপ গ্রহন এবং মহাসাগর ও সাগরের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সমুদ্র বিজ্ঞানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ‘বাংলাদেশ শিপ রিসাইকেল অ্যাক্ট ২০১৮’ সংশোধন করেছে এবং ২০২৩ সাল থেকে হংকং কনভেনশন মেনে চলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ২০২৩ সাল থেকে নিরাপদে জাহাজ রিসাইক্লিং নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন পদক্ষেপেরও ঘোষণা দিয়েছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ উৎপাদন নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞান বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, মহাসাগরের টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে আর্থিক, প্রযুক্তিগত এবং মানব সম্পদের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক সক্ষমতার বৈষম্যগুলি অবশ্যই দূর করতে হবে। তিনি বলেন, সাগর আইনের বিষয়ে জাতিসংঘ কনভেনশনের চতুর্দশ অধ্যায়ের বিধান অনুসারে বাংলাদেশ ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত শর্তে সামুদ্রিক বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে ইচ্ছুক উন্নত দেশগুলির সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য তার সক্ষমতা অনুযায়ী সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিসবনের একটি পাবলিক পার্কে স্থাপন করা স্থায়ী শহীদ মিনার পরিদর্শন করেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।