তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ‘তথ্য’ অর্থ কোনো কর্তৃপক্ষের গঠনকাঠামো, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডসংক্রান্ত যেকোনো স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবই, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, প্রকল্প প্রস্তাব, হিসাব বিবরণী, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, অঙ্কিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তত যেকোনো ইনস্ট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিল এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্যনির্বিশেষে যেকোনো তথ্যবহ বস্তু বা তার প্রতিলিপি। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী সব কর্তৃপক্ষকে একজন তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা, বিকল্প কর্মকর্তা নিয়োগ করা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে।

দেশের জনগণ যেকোনো কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট ফরমে, সাদা কাগজে বা ই-মেইলে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত তথ্য চাইতে পারেন। এই আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ ২০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে। যদি তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকে, সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। যদি কর্তৃপক্ষ তথ্য দিতে অপারগ হয়, তাহলে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অপারগতার কারণ উল্লেখ করে জানিয়ে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

কোনো তথ্য গ্রহণকারী যদি মনে করেন, কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য দিয়েছে যাতে তিনি সন্তুষ্ট নন, সে ক্ষেত্রেও ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। যদি তথ্য গ্রহণকারী আপিলের তথ্য পেয়ে সন্তুষ্ট না হন, সে ক্ষেত্রে তথ্য কমিশনে ৩০ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ফরমেট প্রতিকার চেয়ে আপিল করা যাবে। তথ্য কমিশন ৪৫ দিন থেকে ৭৫ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করবে। অভিযোগ বিবেচনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দোষী প্রমাণিত হলে কমিশন প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা করে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে। অভিযোগ গুরুতর হলে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশও করতে পারবে কমিশন। কোনো তথ্য কারও মুক্তি বা জীবন-মরণসংক্রান্ত হলে, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এভাবেই তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ প্রসার করেছে বর্তমান সরকার। এখন চাইলে যে কেউ আইন অনুযায়ী নিয়ম মেনেই তথ্য পেতে পারেন। বিশেষত তথ্য অধিকার আইনের বাস্তব রূপ হলো সব কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ওয়েবসাইটে জাতীয় তথ্য বাতায়নের মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ। প্রতিটি সরকারি অফিসের দৃশ্যমান স্থানে সিটিজেন চার্টার স্থাপন করা হয়েছে, যা জনগণের তথ্যপ্রাপ্তিতে বা সহজে সেবা গ্রহণের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।