মাকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছেলে। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

রংপুরে জমিলা বেগম (৬০) নামের এক নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, জমিলার হত্যাকারী তাঁর ছেলেকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি।

গ্রেপ্তার আসামির নাম জামিল মিয়া (২২)।

রংপুর জেলা পুলিশ জানায়, গত বুধবার (২৪ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে রংপুরের কাউনিয়া থানার হারাগাছ ইউনিয়নের সিট নাজিরদহ গ্রামে নিজ বাড়ির ঘরের মেঝে খুঁড়ে জামিলা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাঁর ছেলে জামিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং তাঁর দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত জমিলা বেগম ওই গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী। লাল মিয়া আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র বাস করেন। জামিলা বেগমের দুই ছেলে। বড় ছেলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বাস করেন, ছোট ছেলে জামিলকে নিয়ে থাকতেন জামিলা। প্রায় ছয় মাস আগে পেশায় অটোচালক জামিলকে বিয়ে দেন জামিলা। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে ছেলের স্ত্রী কাকলি বেগমের সঙ্গে জামিলার ঝগড়া লেগে থাকত। এ নিয়ে জামিলের সঙ্গেও জামিলার তিক্ততা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে জামিলের স্ত্রী অভিমান করে প্রায় ২ মাস আগে বাপের বাড়ি চলে যান। এরপর থেকে জামিল ও তাঁর মায়ের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। ১৯ আগস্ট দিবাগত রাত ১টার দিকে জামিল ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর মাকে প্রথমে গলাটিপে ও পরে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর বাড়িতে থাকা কোদাল দিয়ে ঘরের ভেতর মায়ের লাশ পুঁতে রাখেন। কয়েক দিন ধরে জামিলের মাকে দেখতে না পেয়ে স্থানীয়দের ও নিকটাত্মীয়দের সন্দেহ হয়। তারা জামিলার বাড়িতে খুঁজতে গেলে ঘরের ভেতর উঁচু নরম মাটি দেখে সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে তারা মাটি খুঁড়ে মানুষের হাত দেখতে পেলে পুলিশে খবর দেয়।

রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) জনাব মো. আশরাফুল আলম জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জামিলকে আটক করে। পরে তাঁর দেখানো মতে লাশ ও আলামত উদ্ধার করা হয়। পরে জামিলকে আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।