চীনের শাংসি প্রদেশের বন্যাকবলিত একটি এলাকা। ছবি: এএফপি

চীনের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারো বাড়িঘর। ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়েছে নিরাপদ জায়গায়। খবর সিএনএনের।

চীনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শাংসি প্রদেশে এবার যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ভারী বৃষ্টি এবং এর কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রাদেশিক আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ওয়াং উইনাই ১২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বলেন, চলতি অক্টোবরে শাংসিতে যে বৃষ্টি হয়েছে, তার পরিমাণ আগের যেকোনো বছরে একই সময়ের তুলনায় ১৩ ‍গুণ বেশি।

স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ওয়াং কিরি বলেন, কমপক্ষে ১৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় কমপক্ষে ১৯ হাজার ৫০০ বাড়িঘর ধসে পড়েছে। আরও ১৮ হাজার ২০০ বাড়িঘর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রদেশে তিনজন মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন। ওয়াং কিরির ভাষ্যমতে, শাংসি প্রদেশে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ৭৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রত্যক্ষ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো এক বিবৃতিতে বলেছিল, ভারী বৃষ্টির কারণে শাংসিতে ৬০টি কয়লাখনি বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এই প্রদেশটি চীনের প্রাকৃতিক কয়লা উৎপাদনের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র। দেশটির মোট কয়লা উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশই এখান থেকে হয়।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ৭৭ লাখ মার্কিন ডলারের খাদ্য ও ত্রাণসহায়তা সরবরাহ করেছে বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির খবরে জানানো হয়েছে।

তবে চীন চলতি বছর এবারই প্রথম বন্যাকবলিত হলো না। এর আগে গত জুলাইয়ে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যায় ৩০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ওই বন্যায় হেনান প্রদেশের রাজধানী ঝেংঝৌয়ের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়। ঝেংঝৌয়ের আবহাওয়া স্টেশন ওই বন্যাকে ‘হাজার বছরে একবার হয় এমন বন্যা’ বলে অভিহিত করেছিল।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন বারবার বন্যাকবলিত হচ্ছে। তাঁরা সতর্ক করে বলেছেন, ব্যাপক বন্যার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বিশ্বে দিন দিনই বাড়ছে।