পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার তিন আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

গাজীপুরে চাঞ্চল্যকর অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম হত্যা ও অটো ছিনতাই মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর।

পিবিআই গাজীপুরের একটি টিম ৬ জুন দিবাগত রাত ৩টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি মো. শাহিনকে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে মো. সালাম ওরফে চঞ্চলকে এবং মো. জাহাঙ্গীরকে খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ৭ জুন সকাল সাড়ে ৮টায়
পিবিআই গাজীপুর কার্যালয়ে হাজির করা হয়।

জানা গেছে, ভিকটিম রবিউল ইসলাম (৪০) প্রতিদিন গাজীপুরের পুবাইল এলাকার মীরের বাজার থেকে নাগদা ব্রিজ, বিন্দান, পাতারটেক ,নারায়ণকুল এলাকায় রিকশা চালাতেন প্রতিদিনের মতো ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। ওই দিন রাত ১২টার সময় অটোরিকশার মালিক মাহাবুব রহমান রবিউলের মোবাইলে ফোন অন্য এক ব্যক্তি একবার ফোন ধরে কথা বলে রেখে দেন। পরে আর কেউ ফোন ধরেননি।

এদিকে রবিউলের স্ত্রী লোকজন নিয়ে ভিকটিমকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন, কিন্তু স্বামীর কোনো সন্ধান পান না। এরপর ওই বছরের ১৩ এপ্রিল বিকেল আনুমানিক ৪টার সময় বিন্দান এলাকার একটি খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় পুলিশ রবিউলের লাশ উদ্ধার করে।

এরপর ভিকটিমের স্ত্রী মরিয়ম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পুবাইল থানায় এজাহার দায়ের করলে থানা তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।

পুবাইল থানা-পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। কিন্তু রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএমের সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায়
পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিপিএমের সার্বিক সহযোগিতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. জামাল উদ্দিন মামলাটি তদন্ত করেন।

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা অটোরিকশা চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। তারা পরস্পর যোগসাজশে ভিকটিম রবিউল ইসলামের অটোরিকশা ভাড়া করে। এরপর সবাই মিলে অটোরিকশায় উঠে মীরের বাজার থেকে পূবাইলগামী রাস্তার দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে
অটোরিকশা থামিয়ে সবাই জুসসহ অন্যান্য জিনিস খেতে থাকেন এবং রবিউল ইসলামকে জুসের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খেতে দেন। তারপর পুনরায় আসামিদেরকে নিয়ে রওনা হওয়ার পর কিছুদূর যাওয়ার রবিউল অচেতন হয়ে পড়লে আসামিদের মধ্য থেকে জাহাঙ্গীর রবিউলকে ড্রাইভিং সিট থেকে সরিয়ে নিজে অটো
চালাতে থাকেন। পরে রাস্তার পাশে একটি খালের মধ্যে রবিউলকে ফেলে রেখে তারা অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়।

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিপিএম বলেন, এটি একটি হত্যা মামলা। অটোরিকশা চুরি করার উদ্দেশ্যে এ হত্যাকাণ্ড
সংঘটিত হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৭ জুন আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।