গ্রেপ্তার ব্যাক্তিদের তিনজন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের প্রধানসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আসামিরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন।

আজ সোমবার দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে তাদের প্রতারণা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন। তিনি বলেন, এসব প্রতারণার ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় সম্প্রতি দুটি মামলা হয়েছে। সেসব মামলার তদন্তের সূত্র ধরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আসামিরা নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সেনাবাহিনীতে কর্মরত হিসেবে পরিচয় দেন। এবং তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক ও অফিস সহকারী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। এমনকি তারা চাকরিপ্রার্থীর কয়েকজনকে সৈনিক ও কয়েকজনকে ঢাকা সেনা সদর দফতরের অফিস সহকারীর ভুয়া নিয়োগপত্র দেন। প্রার্থীরা কর্মস্থলে যোগ দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্রগুলো ভুয়া বলে জানায়। পরে প্রতারক চক্রের সদস্যরা মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করেন।

ভুক্তভোগীরা বিষয়টি সিআইডিকে অবহিত করে। পরে বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তায় সিআইডি ঢাকা মেট্রো পশ্চিম ইউনিট দীর্ঘদিন মনিটর করে এ চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের কাছে ভুয়া নিয়োগপত্র, মোবাইল ফোনসেট, কয়েকজন শিক্ষকের চাকরি এমপিওভুক্তির আবেদনসহ বিভিন্ন চাকরীপ্রার্থীর সিভি, ছবিসহ অন্যান্য কাগজপত্র পাওয়া যায়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদের ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া সহ বিভিন্ন দফতরে তদবির বাণিজ্য করে থাকেন। এছাড়া তারা বিভিন্ন সরকারি দফতরের আদেশের কপি জাল করেন। তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক ও জালিয়াত চক্রের সক্রিয় সদস্য। ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা করে ১১ চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে তারা প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।

ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, আসামিরা একেকজন সপ্তম, অষ্টম শ্রেণি ও এএসএসি পাস। ইতোপূর্বে তারা বিভিন্ন গার্মেন্টসসহ কেউ কেউ সেনানিবাসে কনস্ট্রাকশনের কাজ করেছেন। পরবর্তী সময়ে তারা চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, ভুয়া জমির দালালি, বিট কয়েন বেচাকেনাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. আবদুস সাত্তার (৫২), মো. আলী হোসেন (৪০), মো. শাহাদাত হোসেন (৫৫), মো. মোস্তফা (৬২) ও মো. জামাল হোসেন (৫০)। তাঁদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাইবে সিআইডি।