থানায় না গিয়ে কোনো ঝামেলা অথবা প্রশ্নের পর প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই ঘরে বসে একজন নাগরিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সারা দেশের প্রতিটি থানায় চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি।
সেবাটি চালু হলে ভুক্তভোগী নাগরিককে থানায় যাওয়া লাগবে না। খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে দেশের যেকোনো নাগরিক জিডি করতে পারবেন। খবর জাগো নিউজের।

মঙ্গলবার (২১ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেবার উদ্বোধন করবেন।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা ও পদ্মা সেতু (দক্ষিণ) থানার কার্যক্রম, বাংলাদেশ পুলিশের দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত ১২০টি গৃহ হস্তান্তর, পুলিশ হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় ১২টি পুলিশ হাসপাতাল, ছয়টি নারী ব্যারাক এবং অনলাইন জিডি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেনারেল ডায়েরি (জিডি) মানে সাধারণ বিবরণ। হুমকি, হারানো জিনিস উদ্ধারসহ নানা সমস্যায় নাগরিক পুলিশি সহযোগিতার আশায় কাছের থানায় জিডি করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না থানায় গিয়ে কীভাবে জিডি করতে হয়। ২০১৬ সালে দেশের প্রতিটি থানায় সরবরাহ করা হয় জিডি বুক। এর মধ্যেই চলতে থাকে অনলাইন জিডি চালুর প্রক্রিয়াও।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ছয় বছর আগে অনলাইন জিডি চালুর ঘোষণা আসে। ২০১৬ সালে ডিএমপি জানিয়েছিল, তাৎক্ষণিকভাবে কেউ থানায় যেতে ব্যর্থ হলে অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করতে পারবেন। এমনকি দেশের বাইরে থেকেও জিডি করা যাবে। এছাড়া সরাসরি পুলিশ সদর দপ্তরে ফ্যাক্স ও ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ জানানো যাবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্রাপুর, কলাবাগান ও ক্যান্টনমেন্ট থানা এবং ময়মনসিংহের সদর ও ভালুকা থানায় এটি চলছে। এছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয়টি থানায় চালু হয়েছে অনলাইন জিডির প্রক্রিয়া।

অনলাইন জিডিতে যা লাগছে
বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে শুধু ডিএমপির তিন থানা, ময়মনসিংহের দুই ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয় থানায় এ কার্যক্রম চলছে। এর বাইরে অন্য কোনো থানায় হারানো অথবা প্রাপ্তিসংক্রান্ত জিডি অনলাইনে হচ্ছে না। এটি করতে প্রয়োজন জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, সচল মোবাইল নম্বর ও জন্মতারিখ।

তিন ধাপে করা যাচ্ছে অনলাইন জিডি

প্রথমে gd.police.gov.bd সাইটে ঢুকতে হবে। সেখানে অনলাইনে জিডির একটি পেজ আসবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর ও জন্ম তারিখ লিখে সাবমিট করতে হবে। এরপর পরিচয় নিশ্চিতের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে একটি কোড আপনার দেওয়া মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে।

দ্বিতীয় ধাপে নিজের জন্য নাকি অন্যের পক্ষে জিডি করবেন সেটি নির্বাচন করতে হবে। জিডির ধরন এবং কী হারিয়েছেন অথবা খুঁজে পেয়েছেন তা নির্বাচন করতে হবে। কোন জেলার কোন থানায় জিডি করতে চান তা নির্বাচন করুন, ঘটনার সময় ও স্থান লিখে ‘পরবর্তী ধাপ’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।

সর্বশেষ অর্থাৎ তৃতীয় ধাপে আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা ও ঘটনা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত বর্ণনা লিখতে হবে। জিডি সম্পর্কিত কোনো ডকুমেন্ট থাকলে সেগুলো সংযুক্ত করা যাবে। ই-মেইল অ্যাড্রেস লিখতে হবে।
এরপর ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করলেই সম্পন্ন হবে অনলাইন জিডি। আবেদন সম্পন্ন হলে লগইন করে আবেদনকারী জিডির সর্বশেষ অবস্থাও জানতে পারবেন।