ডাকাত দলের সদস্যদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়

দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের পাঁচজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহার করা নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ সময় ডাকাতিতে ব্যবহার করা একটি পিকআপ ভ্যানও জব্দ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) গুলশান বিভাগ। খবর ডিএমপি নিউজের।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মোহাম্মদ আলী সোহাগ, মো. মোহসিন আলী, মো. নূরুন্নবী ওরফে জনি, মো. আমির হামজা আকাশ ও মো. কাজল। আদালতের মাধ্যমে আসামিদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান সরদার বলেন, গত ১৯ জুলাই একজন গরু ব্যবসায়ী পিকআপযোগে গরুসহ ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় মগবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বনানী থানার নিউ এয়ারপোর্ট রোডের চেয়ারম্যানবাড়ি-সংলগ্ন মহাখালী ফ্লাইওভারের পাশে পৌঁছালে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্যরা অন্য একটি পিকআপ দিয়ে গরুবাহী পিকআপকে চাপ দেন। ধারালো চাকু দিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা হুমকি-ধমকি ও ভয় দেখিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে পিকআপ থেকে নামিয়ে তাঁদের পিকআপে উঠিয়ে নেযন। কিছুদূর গিয়ে অজ্ঞাতনামা এক স্থানে নামিয়ে দেন। পরে গরুসহ গাড়িটি ডাকাত দলের সদস্যরা নিয়ে চলে যান। এ বিষয়ে বনানী থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর এর ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান সরদার আরও বলেন, প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলের সদস্যদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত মঙ্গলবার গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের একাধিক টিম নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতদের গ্রেপ্তার করে।

ডাকাতির কাজে ব্যবহার করা পিকআপ জব্দ করা হয়েছে
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পিকআপে করে ডাকাতি করা গরু ২টি নিয়ে তাঁরা রামপুরা ব্রিজ হয়ে বনশ্রী এলাকার ভেতর দিয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার দিয়ে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। ডাকাতেরা ঈদের আগের দিন গরু দুটি কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া গরুর হাটে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এবং টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন।

মো. কামরুজ্জামান সরদার বলেন, গ্রেপ্তার পাঁচজন একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁরা ঢাকা মহানগর, ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ মহাসড়কে মালবাহী ট্রাক/পিকআপে ডাকাতি করেন। ডাকাতির মালামাল ভৈরব, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া ডাকাত দলের সদস্যরা ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ,টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ইত্যাদি এলাকায় দিনের বেলায় রেকি করেন। রাতে যেসব গোয়ালঘরে তালা বা শিকল লাগানো থাকে, তা তাঁরা লোহার কাটার দিয়ে কেটে গবাদিপশু নিয়ে অপেক্ষমাণ ট্রাকে তুলে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে নিয়ে চলে যান।

আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাঁদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে পিকআপ ভ্যান (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-ঢাকা মেট্রো-ন-২০-৪৭৩৭), লোহার শাবল, লোহার তৈরি কাটার, কাঠের হাতলযুক্ত কাস্তে, ছোট চাকু, হেক্সো ব্লেড, ছয়টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম-এর নির্দেশনায় অভিযানটি পরিচালিত হয়।