কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট সাগর আহম্মেদ বিধান (১৯) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে। সফলতার সঙ্গে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিরা স্বীকার করেছেন, মাদক সংক্রান্ত বিরোধ, প্রেম ও পাওনা টাকার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাগরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়।

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. খাইরুল আলম।

সাগর হত্যায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন কুষ্টিয়ার জুগিয়া শেখপাড়া এলাকার মো. শাকিল (২৮), সবজি ফার্মপাড়া এলাকার মো. শাব্বির আহমেদ শান্ত (১৯) ও মঙ্গলবাড়ীয়া ঈদগাহ পাড়া এলাকার আনারুল ইসলাম (২৯)।

এসপি খাইরুল আলম জানান, সবজি ফার্মপাড়া জুগিয়া এলাকার আব্দুল গনির ছেলে সাগর গত ৮ জানুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে তাঁর মোবাইলে কল পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। দুপুরে না ফেরায় পরিবারের লোকজন ফোন দিলে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ১০ জানুয়ারি সাগরের বাবা কুষ্টিয়া মডেল থানায় নিখোঁজের জিডি করেন। পরে কুষ্টিয়া থানা পুলিশ ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট তদন্ত করতে থাকে। পুলিশ ১৭ জানুয়ারি জানতে পারে, কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার শামুখিয়া তারবাড়ীয়া পুরাতন বালুরঘাট সংলগ্ন পদ্মানদীতে লাশ ভাসছে। এদিকে পাবনা জেলার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। সাগরের বাবা লাশটি তাঁর ছেলের বলে সনাক্ত করেন।

এসপি খাইরুল আলম আরও জানান, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ নিহত সাগরের মোবাইল নাম্বার সহ যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে সরবরাহ করে। সাইবার ক্রাইম ইউনিটের তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে আসামি শাকিল, শাব্বির আহমেদ শান্ত ও আনারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা সাগরকে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, মাদক সংক্রান্ত বিরোধ, প্রেম ও পাওনা টাকার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে তাঁরা সাগরকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। পরে কোমল পানীয়র মধ্যে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে পান করিয়ে সাগরকে অচেতন করে রড দিয়ে মাথায় আঘাত ও চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর লাশ গুম করার উদ্দেশ্য বালুর বস্তা বেঁধে লাশ পদ্মা নদীতে ডুবিয়ে দেয়।

এসপি খাইরল আলম জানান, এ বিষয়ে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।