ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি: ডিএমপি নিউজ

কোরবানির পশু বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে বাসে তুলে বেপারীদের ৬ লক্ষাধিক টাকা লুটের ঘটনায় ১০ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. ফয়সাল আহাম্মেদ রিগান, মো. তারেক মিয়া, তানভীর আহম্মেদ অন্তর, মো. মিলন, মো. জাবেদ ইকবাল ওরফে বাদল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. রতন মিয়া, মো. সেলিম, মো. রুবেল মিয়া ও মো. সুমন মিয়া।

গতকাল শনিবার (২২ জুন) রাজধানী ও ময়মনসিংহ জেলায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। খবর ডিএমপি নিউজের।

আজ রোববার দুপুরে ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) বলেন, ১৫ জুন সন্ধ্যায় ভিকটিম মো. লোকমান এবং তাঁর সঙ্গে আরও চারজন ঢাকায় কোরবানির পশুর হাটে গরু বিক্রি করে জামালপুরে যাওয়ার বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সিভিল এভিয়েশন হেডকোয়াটার্সের পূর্ব পাশে একটি নীল-হলুদ রঙের বাস জামালপুর যাওয়ার কথা বললে লোকমানসহ সবাই সেই বাসে ওঠেন। বাসে ওঠার পর হেলপার বাসের গেট বন্ধ করে দেন। বাস কিছুদূর যাওয়ার পর হেলপার ভাড়া চাইলে লোকমান বলেন, জামালপুর যাব, পরে ভাড়া দেই। এই কথা বলার সাথে সাথেই বাসের হেলপার লোকমানের শার্টের কলার ধরেন। অন্য যাত্রীরা তাঁকে লাথি ও ঘুষি মেরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে চাকুর ভয় দেখিয়ে গরু বিক্রির ৬ লাখ ৮০০ টাকা ও পাঁচটি মোবাইল কেড়ে নেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, পরে ডাকাত দল লোকমানের সঙ্গীদের কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে খিলক্ষেত থানার বিশ্বরোড ফ্লাইওভারের নিচে নামিয়ে দেয়। আর লোকমানের গলায় গামছা ও চোখ বেঁধে অন্যত্র নামিয়ে দেয়। এ ঘটনায় লোকমান ডিএমপির বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

তিনি আরও বলেন, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর হলে গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিম তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গতকাল শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার নাবিস্কো এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ফয়সাল, তারেক, তানভীর, রতন, রুবেল ও সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১৩টি মোবাইল ফোন, দুটি চাকু, প্লাস্টিকের রশি এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বাসটি জব্দ করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিন রাতেই ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি থানার চরপাড়া মোড়ে অভিযান চালিয়ে মিলন, জাবেদ ইকবাল, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের হেফাজত থেকে ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও বলেন, সম্প্রতি এই ডাকাত দল রাজধানীতে ১০-১২টি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে স্বীকার করেছে। বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।