পর্যটকদের উদ্ধার করে পলওয়েল পার্ক অ্যান্ড কটেজে নিয়ে আসে পুলিশ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

ঈদের ছুটিতে কাপ্তাই লেকে বেড়াতে এসে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করেছে রাঙামাটি জেলা পুলিশ।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) পার্বত্য জেলা রাঙামাটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ থেকে মো. রাশেদসহ একই পরিবারের ২০ জনের একটি দল। শুরুতে তারা কাপ্তাইয়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করে। পরে বিকেলে কাপ্তাই থেকে বোটে করে পলওয়েল পার্ক অ্যান্ড কটেজের উদ্দেশে রওনা করেন। কাপ্তাই লেকের মাঝপথেই ঘটে বিপত্তি। তেল ফুরিয়ে গেলে লেকের মাঝখানে বোট বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে লেকে উত্তাল ঢেউ, বাতাস আর বৃষ্টি শুরু
হয়, পাশাপাশি চারপাশ অন্ধকার হতে শুরু করে।

বোটচালক ও আটকে পড়া পর্যটকেরা নিজেদের উদ্ধারে বিভিন্ন জায়গায় কল দিয়ে কোনো ধরনের সহযোগিতা পান না। কাপ্তাই লেকের ঢেউ আর বাতাসে বোট ডুবে যাওয়ার মতো অবস্থা । প্রাণের ভয়ে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। পর্যটকদের অনেকে পাশ দিয়ে যাওয়া বোটগুলোর উদ্দেশে কান্নাকাটি করে বলতে থাকেন,’ভাই, আমাদের না বাঁচান, শুধু আমাদের বাচ্চাগুলোকে নিয়ে যান’, কিন্তু পর্যটকদের অনুরোধে কেউ সাড়া দেয়নি।

এদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসতে দেখে পর্যটকদের মনে ভয় ও আতঙ্ক দেখা দেয়। উদ্ধার পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তাঁরা। উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে রাঙামাটি জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমে কল দেন পর্যটক মো. রাশেদ। তাঁর কল পেয়ে পুলিশ কন্ট্রোল রুম দ্রুত বিষয়টি রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া) মীর মোদাছছের হোসেনকে অবহিত করেন।

পরে পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মাহমুদা বেগমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঘটনাস্থলের কাছে রাঙামাটি জেলার চৌকস পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে নেমে পড়েন। পর্যটকেরা সঠিক লোকেশন দিতে না পারায় কাপ্তাই লেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে পর্যটকদের পেদা টিং টিং এলাকায় খুঁজে পায়। এরপর তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা ৭টার সময় পলওয়েল পার্ক অ্যান্ড কটেজে নিয়ে আসা হয়। পর্যটকেরা পুলিশ সদস্যদের এ সহমর্মিতা দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁরা বাংলাদেশ পুলিশ ও রাঙামাটি জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।