বিসিএসআইআরের সেমিনার কক্ষে রোববার সংবাদ সম্মেলনে নতুন কিট উদ্ভাবনের তথ্য দেওয়া হয়।

করোনা শনাক্তকরণে বাজারে প্রচলিত কিটের চেয়ে অধিক সাশ্রয়ী মূল্যে ১০ গুণ বেশি সক্ষমতার কিট উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। নতুন এই কিটে রোগের উপসর্গ প্রকাশের আগেই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। বিসিএসআইআরের কিটে খরচ হবে মাত্র ২৫০ টাকা। খবর আজকের পত্রিকার।

কিট উদ্ভাবন নিয়ে বিসিএসআইআরের সেমিনার কক্ষে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

গবেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাস ঘন ঘন তার জিনগত আচরণের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। ফলে বাজারে প্রচলিত আমদানি করা কিটে সংবেদনশীলতা ও নির্দিষ্টতা কম হচ্ছে, যা অনেক ক্ষেত্রে ভুল ফল দিতে পারে। এ ছাড়া এসব কিটে আমদানি খরচ অনেক বেশি। এই অবস্থায় বাংলাদেশ শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় কিউআরটি-পিসিআর কিট উদ্ভাবন করা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিসিএসআইআর কোভিড কিট’।

গবেষকেরা বলছেন, এই কিট আমদানি করা কিটের শনাক্তকরণ ক্ষমতার চেয়ে ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী। এমনকি এই কিটে একেবারে ন্যূনতমসংখ্যক ভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষায় প্রাইমার এবং প্রোবের টার্গেট সিকুয়েন্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের অন্যান্য বাণিজ্যিক কিটে এস.এন. ওআরএফ১এবি ( S. N. ORF1ab) জিন ব্যবহার করা হয়। ফলে এসব জিনের মধ্যে সহজে মিউটেশন ঘটতে পারে, নেতিবাচক ফল দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। এদিকে বিসিআইআরের কিটে ‘এম’ জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই জিনে অন্যান্য জিনের মতো মিউটেশন ঘটার প্রবণতা কম। তাই এই কিটে ভুল ফল দেওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করা তুলনামূলক সহজ ও যথাযথ।

গবেষকেরা বলছেন, ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য আরএনএ এক্সট্রাকশন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মূলত এ কারণেই বাণিজ্যিক কিটগুলোর খরচ বাড়ে। বিসিএসআইআরের কিটে খরচ হবে মাত্র ২৫০ টাকা। যেখানে অন্যান্য আমদানি কিটে ব্যয় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এগিয়ে যেতে হলে আমাদের উন্নত জিনোম সিকোয়েন্স লাগবে। এর জন্য সরকারপ্রধানকে বললে তিনি সব করে দিয়েছেন। এর আগে এই ল্যাবে দুই হাজার জিনোম সিকোয়েন্স হয়েছে। প্রতিটি গবেষণাকাজে আমরা সহযোগিতা করে এসেছি। কেউ চাইলে আমরা ল্যাবও দেব।’