পাকিস্তানের করাচিতে পুলিশপ্রধানের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) তিন জঙ্গি, দুই পুলিশ সদস্য, একজন রেঞ্জার্স ও একজন সাধারণ নাগরিক রয়েছেন।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আহতদের বেশির ভাগই পুলিশ ও রেঞ্জার্স কর্মকর্তা। তাঁরা জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলির সময় আহত হয়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যার কিছু পর করাচি পুলিশপ্রধানের কার্যালয়ের প্রবেশদ্বারে হঠাৎ একটি হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে সন্ত্রাসীরা। তার পরই পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই হামলার দায় স্বীকার করে পোস্ট দিয়েছে টিটিপি। মাত্রই কয়েক মাস আগে বান্নু সিটিডি কমপ্লেক্স ও পেশোয়ার পুলিশ লাইনস মসজিদে ভয়াবহ হামলা করেছে নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের জঙ্গিরা।

ডিআইজি ইস্ট-জোন মুকুদ্দাস হায়দার বলেছেন, সূর্যাস্তের আধা ঘণ্টা পরে পুলিশপ্রধানের কার্যালয়ের প্রবেশদ্বারে একটি করোলা গাড়ি এসে থামে। তারপর গাড়ির ভেতর থেকে তিনজন জঙ্গি হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে। তাদের কাছে তিনটি খাবারের ব্যাগও ছিল। এটি ইঙ্গিত দেয় যে তারা দীর্ঘ সময় পুলিশ কার্যালয় অবরোধ করে রাখার প্রস্তুতি নিয়েছিল। জঙ্গিরা সালোয়ার-কামিজ পরা ছিল বলেও জানান তিনি।

একটি বিবৃতিতে পুলিশের মুখপাত্র বলেছেন, এটি একটি বড় অপারেশন ছিল। অপারেশনে ডিআইজি, রেঞ্জার্স ও সেনাসদস্যরা অংশ নিয়েছিলেন। রাত ১০টা ৪৬ মিনিটের দিকে অপারেশন শেষ হয় এবং পাাঁচতলা ভবনটি নিজেরে নিয়ন্ত্রণে নেয়।

সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলি শাহও হামলার খবর পেয়ে আইজিপি অফিসের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে পৌঁছে অভিযান পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট ডিআইজি ও রেঞ্জার্স কর্মকর্তাদের নিজ নিজ জোন থেকে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ বলেন, জিন্নাহ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল সেন্টারে তিনজনের মরদেহ আনা হয়েছে। এর মধ্যে একজন পুলিশ কনস্টেবল গোলাম আব্বাস এবং রেঞ্জার্সের সাব-ইন্সপেক্টর তৈমুর বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অপর মরদেহের পরিচয় সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সিন্ধু পুলিশ এর আগে সাহসিকতার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করেছে। আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস, তারা আবার তা করবে, এ ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা আমাদের নিরস্ত করতে পারবে না।’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ জিয়ো নিউজকে বলেছেন, সরকার সিন্ধু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ইতিমধ্যে মুখ্য সচিব ও আইজিপির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সূত্র: আজকের পত্রিকা।