দলই চা বাগান কার্যালয় পরিদর্শন করছেন পুলিশের কর্মকর্তারা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার দলই চা বাগান কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এক নৈশপ্রহরী ও ছতিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুন রাতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে দলই চা বাগান কার্যালয়ের ৫টি কক্ষে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে যায়। এই ঘটনায় বাগানের দুজন নৈশ্প্রহরী প্রসাদ পাশি (২৬) ও সৎ নারায়ন রাজভর (৩০) গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হন।

পরে নৈশপ্রহরী প্রসাদ পাশি ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

অপর একটি ঘটনায় কমলগঞ্জ উপজেলার  ছতিয়া গ্রামে জমিতে গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়েশা আক্তার (১৯) নামে এক তরুণী মারা যান।

ঘটনা দুটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম অ্যান্ড অপস) সুদর্শন কুমার রায়, সহকারী পুলিশ সুপার ( শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহিদুল হক মুন্সী ও কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান, মামলা দুটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা।

বেলা ১২টার সময় পুলিশ সুপার উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রসাদ পাশির বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা জানান এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের সম্মুখীন করার আশ্বাস দেন। পরে বেলা ২টার সময় ছতিয়া গ্রামের নিহত তরুণী আয়শা আক্তারের বাড়িতে যান এবং নিহতের বাবা মা ও পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানান এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের কথা জানান।

এসময় পুলিশ সুপার উপস্থিত উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দুটি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের যেকোনো মূল্যে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এবং তিনি বলেন, নিরপরাধ কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়।

উল্লেখ্য, দলই চা বাগানে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুর ঘটনায় কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ১২ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দলই চা বাগানের দুজন নৈশ প্রহরীসহ মোট তিনজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন চা বাগানের  নৈশপ্রহরী কামাল আলী, মাহবুব এলাহী ও দলই চা বাগান এলাকার বাসিন্দা ভুট্টো মিয়া। এবং ছতিয়া গ্রামের তরুণী আয়শা আক্তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সামাদ ও সিরাজ নামে দুই আসামিকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।