এসএসসি পরীক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় উদ্ধার করা আলামত ও গ্রেপ্তার আসামি। ছবি: পুলিশ নিউজ

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখকে (১৬) হত্যার ঘটনায় করা মামলার ১৫ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

লোহাগড়া থানার পুলিশ জানায়, চর দৌলতপুর গ্রামের কৃষক ইকরাম শেখের ছোট ছেলে সিরাজ। সে চর দৌলতপুর সরস্বতী একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ৬ মে রাতে সিরাজের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল আসে। সে ফোনের অপর প্রান্তের কারও সঙ্গে কথা বলে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।

পরের দিন পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও সিরাজ আর বাড়িতে ফেরেনি। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় সিরাজের সহপাঠীরা তার বাড়িতে খোঁজ নেয়। পরিবারের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা নিখোঁজের দিন থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো খোঁজ পায়নি।

৯ মে পরীক্ষার্থীর বাবা লোহাগড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ওই জিডির পর পুলিশসহ জেলার গোয়েন্দা টিম আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতে থাকে।

নিখোঁজের পর ১০ মে দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের দক্ষিণ লংকারচর গ্রামের শওকত হোসেন মিরুর আমবাগান থেকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নিখোঁজ সিরাজের মৃতদেহ শনাক্ত করেন তার বাবা ইকরাম শেখ।

মৃতদেহ উদ্ধারের সংবাদ প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারের জন্য জেলা পুলিশের একাধিক টিমকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ মে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।

ওই মামলার মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উন্মোচনসহ জড়িত প্রধান আসামি ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছোরা, রক্তমাখা একটি কোদালের আছাড়ি, একটি রক্তমাখা পলিথিন ও হত্যাকাণ্ডের সময় আসামির পরিহিত একটি টি-শার্ট উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন সবুর শেখ (৫২), তাঁর স্ত্রী শাহিনা বেগম (৪৭), ছেলে জাহিদুল শেখ (২০) ও মেয়ে ইয়াসমিন খানম (১৬)। তাঁদের বাড়ি লোহাগড়া উপজেলার চরদৌলতপুর গ্রামে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি সবুর শেখ ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছন।