সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

‘পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরে ফেরা মানুষের ভ্রমণ নিরাপদ-স্বস্তিদায়ক করতে ঢাকার প্রবেশ ও বাহির পথ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। এ জন্য পার্শ্ববর্তী সব পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়কে যাতে ফিটনেসবিহীন যানবাহন না আসতে পারে, সে জন্য গ্যারেজগুলোতে রাখা হচ্ছে নজরদারি।’

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘ঢাকার টার্মিনাল থেকে বাসগুলো ছেড়ে সারা দেশে চলে যাচ্ছে। শুধু সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকেই দেশের ৩৮টি জেলার বাস যায়। মাওয়া হাইওয়ে, সিলেট ও চট্টগ্রাম হাইওয়েতে বাসগুলো ওঠে, কিন্তু টার্মিনালের পরের রাস্তাগুলো সুবিধার নয়। রাস্তার সংস্কারকাজ চলছে, দ্রুততম সময়ে সংস্কার হয়ে গেলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।’

অতিরিক্ত কমিশনার মুনিবুর রহমান বলেন, ‘এবারের ঈদ উপলক্ষে অন্তত এক থেকে সোয়া কোটি মানুষ ঢাকা ছাড়বে। বাসের ট্রিপগুলো ঠিক সময়ে দিতে পারলে শিডিউল বিপর্যয় এড়ানো যায়। শিডিউল বিপর্যয় হলেই রাস্তায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে। তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়।’

তিনি বলেন, ‘পোশাকশ্রমিকদের শেষ মুহূর্তে একসঙ্গে ছুটি হয়। লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে বাড়িতে রওনা হয়। তখন কিছুটা ভোগান্তি দেখা যায়। আশা করি অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার ভালো সেবা দিতে পারব।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ডিএমপির অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। ট্রাফিক বিভাগ নিয়মিত গাড়ির কাগজ-যাচাই করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। অনেক ভালো গাড়ির ফিটনেস থাকে না, আবার দেখতে ভাঙাচোরা মনে হলেও দেখা যাচ্ছে সেই গাড়ির ফিটনেস থাকে। ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও কোনো গাড়ি রাস্তায় নষ্ট হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তি তৈরি করবে।’

তিনি বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে সব সময় পদক্ষেপ থাকে। রেকার, ডাম্পিং গ্রাউন্ড, জনবল রয়েছে। অনেক সময় ফিটনেস ভালো থাকলেও অযাচিত যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এমন আশঙ্কা থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের ব্যবস্থা থাকে। এন্ট্রি-এক্সিট পয়েন্টে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। টার্মিনালের ভেতর থেকে বাসে যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, গণপরিবহনগুলো নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না। বিশেষ করে ছাদে কোনো যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে যাবে না। দূরপাল্লার গণপরিবহনগুলো মহানগরীর মধ্যে যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ করবে না। এ ক্ষেত্রে গেটলক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। মোটরসাইকেলে যাঁরা দূরপাল্লার যাত্রী থাকবেন, তাঁদের অবশ্যই যাত্রাকালীন হেলমেট পরতে হবে। ঝুঁকি পরিহার করার জন্য মোটরসাইকেল যাত্রীদের অতিরিক্ত মালপত্র বহন না করা জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে।

যেসব যানবাহনে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারটি যেন মেয়াদোত্তীর্ণ/ঝুঁকিপূর্ণ না থাকে, সে বিষয়টি যাত্রাপথের আগে নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চ টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দরকেন্দ্রিক যাত্রীদের গমনাগমন সুষ্ঠু করার জন্য ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সচেষ্ট থাকবে বলেও জানান তিনি। সূত্র : ঢাকা পোস্ট