আত্মসমর্পণের পর রুশপন্থীদের তত্ত্বাবধানে ইউক্রেনীয়দের সেনাদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

মারিউপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় অবস্থানকারী সর্বশেষ ইউক্রেনীয় সেনাদলটিও আত্মসমর্পণ করেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কারখানাটির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। খবর প্রথম আলোর।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজভস্তালের ভূগর্ভস্থের যে জায়গাগুলোয় জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল, সেগুলো এখন রুশ সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।’ সর্বমোট ২ হাজার ৪৩৯ জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন, মারিউপোল ও ইস্পাত কারখানাটি ‘পুরোপুরি স্বাধীন’ হয়েছে।

ক্রেমলিনপন্থী টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতেও ইউক্রেনের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেড ইউনিটের কমান্ডার সের্গেই ভোলিনস্কির একটি ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে। ওই ভিডিওতে ভোলিনস্কি বলছেন, তাঁর অধীন পরিচালিত সেনাদলটি আত্মসমর্পণ করেছে।
যে প্রধান বাহিনীগুলো এ ইস্পাত কারখানাকে সুরক্ষা দিচ্ছিল, তার একটি এটি।

রাশিয়ার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, বিরোধীপক্ষকে ইউক্রেনীয় সেনারা বলেছেন, তাঁরা ওই ইস্পাত কারখানা থেকে বের হয়ে যাবেন এবং নিজেদের জীবন বাঁচাবেন। সামনের দিনগুলোয় সবাই ওই কারখানা থেকে বের হয়ে যাবেন বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক লাইভ ভিডিওতে আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডার ডেনিস প্রকোপেঙ্কো বলেছেন, শুধু মৃতদেহগুলোই সেখানে আছে। তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর উচ্চ কমান্ড থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমাদের সেনারা শহরের সুরক্ষা প্রদানের কাজ বন্ধ করে নিজেদের জীবন বাঁচায়। আমার আশা, শিগগিরই পরিবারগুলো ও ইউক্রেনের সবাই এখন তাদের যোদ্ধাদের সম্মানের সঙ্গে সমাহিত করতে পারবে।’

এর আগে রাশিয়া বলেছিল, আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় অবস্থানকারী নয় শতাধিক ইউক্রেনীয় সেনাকে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকার একটি কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে যে নির্দেশনা রয়েছে, তা এসব বন্দীর ক্ষেত্রেও অনুসরণ করা হবে। বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ এ সপ্তাহে দাবি করেছেন, এই বন্দীদের যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়। বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।