আসমা হত্যা মামলায় সিএমপির পতেঙ্গা মডেল থানার অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: সিএমপি

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পতেঙ্গা মডেল থানার অভিযানে আসমা আক্তার হত্যা মামলায় তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিএমপি জানায়, মামলার বাদী মো. আলম পেশায় একজন রিকশাচালক। প্রায় ১২ বছর আগে বাদীর তৃতীয় মেয়ে আসমা আক্তার পোশাক কারখানায় চাকরির উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম শহরে আসেন। চাকরির সুবাদে বিবাদী কাজী সাহেদুজ্জামান রিমনের সঙ্গে আসমার পরিচয় হয় এবং একপর্যায়ে তাঁদের বিয়ে হয়। আসমা ও রিমনের ৯ বছরের এক ছেলে ও তিন বছর ১০ মাস বয়সী দুই মেয়েসন্তান রয়েছে।

গত ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় বিবাদী তাঁর মোবাইল নম্বর থেকে বাদীর মোবাইল ফোনে কল করে জানান, বাদীর মেয়ে আসমা তাঁর বর্তমান ঠিকানার বাসায় গলায় ফাঁস দিয়েছে। বাদী খবর পেয়ে চট্টগ্রাম শহরে থাকা অপর মেয়ে রোকেয়াকে ফোন করে বিবাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পতেঙ্গায় যেতে বলেন।

ওই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাদীর মেয়ে রোকেয়া জানান, আসমার মরদেহ ফুলে যাচ্ছে বিধায় বিবাদী মরদেহটি তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন বলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁকে জানিয়েছে। তারপর ওই দিন রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিবাদীর সঙ্গে বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ থাকলেও এরপর থেকে বিবাদীর মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। বিবাদীর সঙ্গে বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করতে না পেরে বাধ্য হয়ে একপর্যায়ে ১২ জুন দিনের বেলায় চট্টগ্রাম শহরে আসেন।

বাদী তাঁর মেয়ের বর্তমান ঠিকানার বাসায় যান এবং জানতে পারেন যে, লোকজন কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় ভুক্তভোগীর মরদেহ ভাড়া ঘরে পড়ে থাকতে দেখেছেন এবং ভুক্তভোগীর গলায় দাগ ছিল।
পরবর্তী সময়ে বিবাদী স্থানীয় একজন চিকিৎসক নিয়ে এলে পরীক্ষা করে চিকিৎসক আসমাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বিবাদী তাঁর সঙ্গীয় লোকজনসহ লাশটি অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।

বিবাদীর কথাবার্তা ও ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোঁজখবর নিয়ে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের ধারণা হয়, ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার আগে যেকোনো সময় একই উদ্দেশ্যে বিবাদী তাঁর সঙ্গীয় লোকজনের সঙ্গে যোগসাজশে পতেঙ্গা মডেল থানাধীন উত্তর পতেঙ্গা পশ্চিম হোসেন আহম্মদপাড়া খেজুরতলার আলী স্কুলের পেছনে রনির সেমিপাকা ভাড়া ঘরের ১ নম্বর কক্ষের ভেতর আসমাকে হত্যা করেন। পরে মরদেহ গুম করার জন্য ‘রামগঞ্জ ০৩ কিলোমিটার লিখা’ মাইল ফলকের আগে ডান দিকে লোকাল রাস্তায় সামান্য গিয়ে একটি স্কুলের পাশে নিয়ে যান তিনি।

বাদীর উল্লিখিত এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়। সেই মামলায় ১৪ জুন নগরীর ইপিজেড থানাধীন কাজীগলি এলাকা থেকে কাজী সাহেদুজ্জামান রিমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর রিমনকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।