পুলিশি হেফাজতে চুরির দায়ে গ্রেপ্তার ৩ জন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা পৌরসভাধীন গোবিন্দপুর মাদ্রাসাপাড়ার এক নারীর চুরি যাওয়া প্রায় ৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ। গ্রেপ্তার করেছে চুরির সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে।

জানা গেছে, গতকাল রোববার (৬ নভেম্বর) গোবিন্দপুর মাদরাসাপাড়ার মো. সানোয়ার হোসেনের স্ত্রী মোছা. জবেদা খাতুনের আনুমানিক সাড়ে ৫ ভরি গহনা তার নিজ বাড়ি থেকে চুরি হয়। সেদিন দুপুর দেড়টার দিকে জবেদা খাতুন বাড়ির দরজার সামনে ৬০/৬৫ বছরের এক নারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। ওই নারী তাকে মা বলে সম্বোধন করেন এবং পানি খেতে চান । তবে পানি না খেয়েই তিনি দ্রুত চলে যান। পরে জবেদা খাতুনের সন্দেহ হলে নিজের শোবার কক্ষে গিয়ে দেখতে পান ওয়্যারড্রোবের উপরের ড্রয়ারে থাকা স্বর্ণের একটি সীতা হার, একটি চিক (হার),একজোড়া বালা,ছোট-বড় মোট তিনটি আংটি নেই।

স্বর্ণালংকার চুরির বিষয়টি অফিসার ইনচার্জ আলমডাঙ্গা থানা জানতে পেরে সাথে সাথে জেলার পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। এরপর পুলিশ সুপারের নির্দেশে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল আলীমের নেতৃত্বে একটি টিম থানায় রক্ষিত আসামিদের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখেন ইতিপূর্বে জাহানারা বেগম নামে এক আসামি হাপানিয়া এলাকায় একই ধরনের কৌশল অবলম্বন করে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন এবং থানায় মামলা হয়। এরপর জাহানারা বেগমের ছবি সংগ্রহ করে মামলার বাদী জবেদা খাতুনকে দেখালে তিনি আসামিকে চিনতে পারেন। এরপর পুলিশ জবেদা খাতুন ও তার স্বামীকে নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার কুষ্টিয়া সদর থানাধীন চৌড়হাস (ক্যানালপাড়া) পাড়ায় আসামি জাহানারার বাড়িতে ৬ নভেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ২টা ৪০ মিনিটে উপস্থিত হন। তখন জবেদা আসামি জাহানারা বেগম স্বর্ণালংকার চুরির কথা স্বীকার করেন এবং নিজের স্টিলের আলমারির ভেতর থেকে চুরি করা সীতাহার( ওজন অনুমান ২ ভরি) এবং ছোট, বড় মোট তিনটি আংটি ( ওজন অনুমান ৮ আনা) বের করে দেন । বাকি স্বর্ণালংকার কোথায় আছে জানতে চাইলে জাহানারা জানান যে, একটি স্বর্ণের চিক (হার), (ওজন অনুমান ১.৫ ভরি) ও একজোড়া স্বর্ণের বালা (ওজন অনুমান ১.৫ ভরি) তার সহযোগী মো. সোহাগ আহম্মেদের কাছে গচ্ছিত আছে। তখন পুলিশ জাহানারা বেগমকে নিয়ে সোহাগের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তার কাছ থেকে একটি স্বর্ণের চিক (হার) (ওজন অনুমান ১ ভরি ৮ আনা ) ও একটি স্বর্ণের বালা (ওজন অনুমান ১২ আনা) উদ্ধার করেন।

উদ্ধার করা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

তখন জানা যায়, জাহানারা বেগম স্বর্ণালংকার বিক্রি করে সোহাগের কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। তখন বাকি বালাটি ও ৪৫,০০০/- টাকা কোথায় আসামী জাহানারা বেগমের কাছে জানতে চাইলে ওই বালা ও টাকা তার মেয়ে মোছা. পলি খাতুনের কাছে গচ্ছিত আছে বলে জানান। তখন পুলিশ পুনরায় জাহানারা খাতুনের বাড়িতে গিয়ে পলি খাতুনের কাছ থেকে একটি স্বর্ণের বালা ও নগদ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে জব্দ করেন।

চুরির ঘটনায় জবেদা খাতুন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন।