যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। ছবি: পুলিশ নিউজ

নিউইয়র্ক সফররত ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)-কে সংবর্ধনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জ্যাকসন হাইটসের কাছে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা হিন্দাল কাদির বাপ্পা। ওই সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতাসংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছি। এখন চলছে মুক্তির লড়াই। এ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এই লড়াইয়ে জিততেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে, উন্নয়নের বিরুদ্ধে এবং অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তা রুখে দিতে হবে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচারের বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘একসময় মনে করা হয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাংবাদিকতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। কিন্তু বাস্তবে কী দেখছি আমরা? আশা করা হয়েছিল, সমাজের তথ্যচিত্রটি সবিস্তারে উঠে আসবে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে যত ভুয়া, আজগুবি তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘২২ জন তথ্যসন্ত্রাসী রয়েছে। এদের জবাব দিতে হবে। আপনি যে মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেই বিশ্বাসে যদি চ্যাম্পিয়ন হন, তাহলে আপনাকেই সেটি পালন করতে হবে।’

তথ্যসন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘তথ্যসন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে, তারা মানবতাবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘নোংরা জিনিস ফেসবুকে দেখামাত্র ফ্লাশ করা দরকার। এর বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্যকে উপস্থাপন করতে হবে। তাহলেই মিথ্যার পরাজয় ঘটবে।’

জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ায় সঙ্গে রয়েছেন জানিয়ে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার চলমান লড়াইয়ে আমি সকলের সাথে রয়েছি। দেশটিকে সবার আগে রেখে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার পথকে সুগম রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে আইজিপি বলেন, ‘তাঁরা অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সাল থেকে নাকি র‍্যাব কর্তৃক ৬০০ লোক গুম হয়েছেন। অথচ আমি র‍্যাবে ঢুকেছিলাম ২০১৫ সালে। তাহলে আমাকে কেন ওই তালিকায় নেওয়া হয়েছে?’

আইজিপি বলেন, ‘আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ, এটা করেছে তারাই, যারা সত্তর সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চারটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা তিন বছর চেষ্টা করেছে কথিত স্যাংশনের (নিষেধাজ্ঞা) জন্য।’

আইজিপি আরও বলেন, ‘২০০৯ সালে আমি এই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবে চাকরিতে ছিলাম। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যে ৬০০ লোক গুমের অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের কোনো তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘ পুলিশপ্রধানদের সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন আইজিপি।