ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এর সঙ্গে গতকাল জাতিসংঘের পুলিশ অ্যাডভাইজার ও পুলিশ ডিভিশনের ডিরেক্টর পুলিশ কমিশনার লুইস কারিলহোর দ্বিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)-এর সঙ্গে জাতিসংঘের পুলিশ অ্যাডভাইজার ও পুলিশ ডিভিশনের ডিরেক্টর পুলিশ কমিশনার লুইস কারিলহোর দ্বিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জাতিসংঘ সদর দফতরে গতকাল শুক্রবার আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্যতম প্রধান পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ উল্লেখ করে লুইস কারিলহো শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতি এবং পুলিশ সদস্যদের পেশাদারত্ব ও কর্মদক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি পূর্ব তিমুর এবং হাইতিতে পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের যে উঁচু মানের পেশাদারত্ব ও দায়িত্ববোধ দেখেছেন, তা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মালি ও কঙ্গোতে কর্তব্যরত বাংলাদেশের পুলিশের সদস্যদের পেশাদারত্বেরও প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে আসছে, যা নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

জাতিসংঘের পুলিশ অ্যাডভাইজার লুইস কারিলহোকে শুভেচ্ছা স্মারক হস্তান্তর করছেন আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদ।ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

আইজিপি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের যেকোনো প্রয়োজনে সাড়া দিতে বাংলাদেশ পুলিশ সদা প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ করে আফ্রিকায় ঝুঁকিপূর্ণ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষ ও পেশাদারি বিশেষায়িত ইউনিট মোতায়েনের অনুরোধ জানান আইজিপি। এ ক্ষেত্রে তিনি সোয়াট, ক্যানাইন, রিভারাইন ও গার্ড পুলিশ এবং ফরেনসিক ইউনিটসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট মোতায়েন এবং জাতিসংঘ পুলিশের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রশিক্ষণ আয়োজনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন।

আইজিপি জাতিসংঘ সদর দফতর এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাঠপর্যায়ে উচ্চ পদে বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাদের নিয়োগের অনুরোধ জানান। সভায় শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের বিষয়েও আলোচনা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসডিজি বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশের তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরেন আইজিপি।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশ আগামী দিনগুলোতেও সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন লুইস কারিলহো।

জাতিসংঘের শান্তি পদক্ষেপ ও বৈশ্বিক সহযোগিতার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে আইজিপি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

সভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাদেকুজ্জামান এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ওভারসিজ অ্যান্ড ইউএন অপারেশন শাখার অতিরিক্ত ডিআইজি নাসিয়ান ওয়াজেদ উপস্থিত ছিলেন।