‘আপনজনকে শেষবারের মতো শায়িত করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাশ নিয়ে বসে থাকতে হতো। আজ আমাদের অপেক্ষার প্রহর কাটল। আমরা আইজিপি স্যারের বদান্যতায় একটি স্থায়ী কবরস্থান পেলাম।’
আবেগঘন কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান। কবরস্থান না থাকায় তাঁর মতো মেঘনা নদীর ভাঙনকবলিত অনেককে দুর্ভোগ পোহাতে হতো।
সে সংকট নিরসন হয়েছে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)-এর উদ্যোগে।
প্রায় দুই হাজার ভূমিহীন মানুষের জন্য কবরস্থান গড়ে দেওয়ার মূল স্থপতি আইজিপি ও তাঁর স্ত্রী পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আইজিপি ও পুনাক সভানেত্রী লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব চরমনসা গ্রামে এ কবরস্থানের ফলক উন্মোচন করেন। পরে আইজিপি স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
ওই সময় পুলিশের প্রধান বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরের এ এলাকায় বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত ভূমিহীনদের জন্য কোনো কবরস্থান নেই’ সংক্রান্ত রিপোর্ট একটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়। রিপোর্টটি দেখে আমার স্ত্রী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। মূলত তাঁরই প্রেরণায় আমরা নিজস্ব উদ্যোগে জমি কিনে এখানে কবরস্থান এবং একটি মসজিদ স্থাপন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অনেক উন্নত হয়েছে। এখন মৃত্যুর পর কারও দাফন-কাফন অথবা সৎকার হবে না, তা ভাবা যায় না।’
আইজিপি আরও বলেন, ‘এ কবরস্থানের উপকারভোগী শুধু ভূমিহীনেরা নন, এ গ্রামের সাধারণ মানুষও হবেন।’
কবরস্থানটিকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বিবেচনা করে তাঁর জন্য সবার কাছে দোয়া চান আইজিপি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের বেশি বেশি সিটিজেন রিপোর্টিং হলে সমাজ ও দেশ উপকৃত হবে।’
আইজিপি ও পুনাক সভানেত্রী ভূমিহীন আবদুর রহমানের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জমির দলিল হস্তান্তর করেন। তাঁরা উভয়ে কবরস্থানে একটি করে গাছের চারা রোপণ করেন।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসাইন ও লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান বক্তব্য দেন।
প্রায় সাড়ে ২৯ শতক আয়তনের এ কবরস্থানে প্রায় ৪০০ মানুষকে দাফন করা যাবে।
কবর উদ্বোধন শেষে আইজিপি জেলা পুলিশ লাইনসের ড্রিল শেডে রেঞ্জ এবং জেলার পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভায় যোগ দেন। পরে তিনি দাশের হাট পুলিশ ফাঁড়ি ও নারী ব্যারাক উদ্বোধন করেন।