হারানো মুঠোফোন উদ্ধারের পর প্রকৃত মালিককে হস্তান্তর করছে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

যশোর সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের যাত্রা শুরু হয়েছে মাত্র আট মাসের কিছু বেশি সময় হলো। এর মধ্যেই অসাধারণ সাফল্য নিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করেছে এই সেল। গত আট মাসে এই সেল ২৩১টি হারানো মুঠোফোন, মুঠোফোনের আর্থিক লেনদেন প্ল্যাটফর্মে ভুল নম্বরে চলে যাওয়া ২২ জনের টাকা উদ্ধার করেছে, ফেসবুকে হয়রানির শিকার ১২ জনকে সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু সাফল্য অর্জন করেছে এই সেল।

শুধু গত মে মাসেই এই সেল সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরিপ্রেক্ষিতে ৪৪টি হারানো মুঠোফোন উদ্ধার করেছে। এসব মুঠোফোনের মধ্যে ৪০টি যশোর জেলার বিভিন্ন স্থান, একটি নারায়ণগঞ্জ, একটি ঢাকা, একটি ঝিনাইদহ এবং একটি মাদারীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এ ছাড়া গত মাসে ভুল নম্বরে চলে যাওয়া আট ভুক্তভোগীর মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮৫ টাকা উদ্ধার করে প্রকৃত মালিককে হস্তান্তর করেছে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে হ্যাকড হওয়া ১৪টি ফেসবুক আইডি পুনরুদ্ধার করেছে। যশোরের অভয়নগর থেকে নিখোঁজ তিন ভুক্তভোগীকে উদ্ধারেও সহায়তা করেছে এই সেল।

যশোর সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের যাত্রা শুরু গত বছরের ১৩ অক্টোবর। এরপর গত আট মাসে এই সেল যশোর জেলার বিভিন্ন থানায় হওয়া জিডির পরিপ্রেক্ষিতে মোট ২৩১টি হারানো মুঠোফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

ভুক্তভোগীর পাশে সদা সর্বদা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এ ছাড়া মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেনের প্ল্যাটফর্মে ভুল নম্বরে চলে যাওয়া ২২ জন ভুক্তভোগীর মোট ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬৮০ টাকা উদ্ধার করে মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছে এই সেল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হয়রানির শিকার ১২ জন ভুক্তভোগীকে সহায়তা দিয়েছে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। ফেসবুকে উসকানি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করায় তিনজনকে গ্রেপ্তারে সহায়তা দিয়েছে এই সেল। এ ছাড়া বেহাত হওয়া ৩৮টি ফেসবুক আইডি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

এই সেল গত আট মাসে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনে অভিযোগকারী দুজন ভুক্তভোগীকে আইনগত সহায়তা দিয়েছে। যশোরের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ ১০ জনকে জিডির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধারেও সহায়তা করেছে তারা।

যশোরের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের উদ্ধার করা মুঠোফোন ও টাকা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারেও সহায়তা দিয়েছে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। এ ছাড়া অস্ত্র এবং ধর্ষণ, খুনসহ একাধিক মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে সহায়তা দিয়েছে তারা।

এই সেল এখন যশোরের অভয়নগর থানায় পিপিসি গ্যালারি অ্যাপ ব্যবহার করে ২৫ ভুক্তভোগীর কাছ থেকে সাত লাখের বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছে। এরই মধ্যে এ মামলায় নুর মোহাম্মদ (৩৫), রিপন কুমার বিশ্বাস (৩২), মো. আল আমিন (২৮), আজগার আলী (৪২) ও নাসিম আল সবুজ (২২) নামের পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা সাতটি মুঠোফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সাইবার ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে।