ক্র্যাবের ক্রীড়া উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্ট কোনো পুলিশ সদস্য ‘উন্নত জীবন’ চাইলে তাঁকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেওয়া হবে।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) ক্রীড়া উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন। খবর প্রথম আলোর।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গণমাধ্যমে মাঝেমধ্যে তথ্যের বিভ্রাট ঘটে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বেরিয়েছে যে পুলিশ সদস্যরা বিরক্ত। ১৬-১৭ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাঁরা অতিষ্ঠ-বিরক্ত। নিউজে নাম প্রকাশ না করে ডিএমপির একজন কনস্টেবলের বক্তব্য দেওয়া হয়। ওই কনস্টেবল প্রত্যাশা করেছিলেন, পুলিশে এলে উন্নত জীবন পাবেন, সে জীবন পাননি। বাহিনী বেআইনি খাতে টাকা নিচ্ছে। ব্যাংকের জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ডিএমপির কোনো সদস্যের কাছ থেকে একটি পয়সাও কর্তন করা হয়নি।

ওই প্রতিবেদনের পর পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, তোমরা যখন চাকরিতে এসেছ, তখন জেলায় কতজন আবেদন করেছিল? কেউ কেউ বলেছে তিন হাজার। সেখানে চাকরি হয়েছে কতজনের? ৩০ জন। তোমাদের কি জোর করে চাকরিতে আনা হয়েছিল? বলে, না স্যার, আনা হয়নি। উন্নত জীবন আশা করছিলা, কিন্তু পাও নাই। উন্নত জীবন যেখানে পাও আবেদন করো, সম্মানের সঙ্গে চাকরি থেকে তোমাদের বিদায় করে দেব।’

‘১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা ডিউটি করে একজন কনস্টেবল’ শিরোনামে সম্প্রতি গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পুলিশ সদস্যদের কর্মঘণ্টা নিয়ে করা ওই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে টেনে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘পুলিশকে ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব পালন করতে হয়। আপনাদের কী ধারণা, ডিএমপি কমিশনার দুই ঘণ্টা ডিউটি করে? আমাদের তো ঘুমের সময় নেই, খাওয়ার সময় নেই। আমরা যখন চাকরিতে আসছি, তখন জেনে, শুনে, বুঝেই আসছি। ২৪ ঘণ্টার ডিউটির বাহিনীতে আমি ১৭ ঘণ্টা কাজ করছি। ২৪ ঘণ্টাই যে ডিউটি করানো হচ্ছে না, এটার জন্য সদস্যদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।’

কনস্টেবলদের উদ্দেশে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসএসসি পাস করে পুলিশে এসেছ। পায়ের জুতা থেকে শুরু করে মাথার টুপি পর্যন্ত সরকার বিনা পয়সায় দিচ্ছে। বিনা পয়সায় খাচ্ছ, ব্যারাকে বিনা পয়সায় থাকছ, আবার সরকার তোমাকে বাসাভাড়াও দিচ্ছে। তুমি যেখানে যাচ্ছ, সেখানে গাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে, খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। হ্যাঁ, মানসিক চাপ আছে। কাজ করতে গেলে এ চাপ-পরিশ্রম পুলিশে থাকে।’

জবাবদিহির প্রসঙ্গ টেনে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সাংবাদিকতা যদি না থাকত, তাহলে সরকারি চাকরি যে কী মজার হতো! আমরা চাই না এই চাকরি মজার হোক। সাংবাদিকতার জায়গাটা জবাবদিহির। আমার মতো কমিশনারের দায়িত্বকেও জবাবদিহির আওতায় নিয়ে এসেছেন সাংবাদিকেরা।’