অভয়নগরে রকিবুল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭ আসামির ৩ জন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোরের অভয়নগর উপজেলার দত্তরগাতিতে চাঞ্চল্যকর রকিবুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে পিস্তলের গুলি, কার্তুজ ও ম্যাগাজিন ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১২ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে দত্তরগাতি এলাকায় রকিবুল ইসলাম ওরফে রকিব (৩২) ও স্ত্রী বর্ষা খাতুনকে (২৫) দুষ্কৃতকারীরা গুলি করে।

গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত রকিবুলকে স্থানীয় জনগণ উদ্ধার করে ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় নিহত রকিবুল ইসলামের মা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় এজাহার দায়ের করলে ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় অভয়নগর থানার পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এজাহারে উল্লেখিত সন্দেহভাজন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতের আদেশে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি সাইফুল আলমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিলন কুমার মণ্ডলের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত অভয়নগর থানা ও ফুলতলা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আরও ২ জনকে আটক করে।

আটককৃতদের তথ্য মোতাবেক হত্যাকাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি রাখার স্থানে তল্লাশি করে ২টি পিস্তলের গুলি ভর্তি ১টি ম্যাগাজিন, ৩টি কার্তুজ উদ্ধার হলেও আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও স্থানীয়ভাবে জানা যায়, নিহত ভিকটিম রকিবুল ইসলাম ওরফে রকিব নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে এলাকায় ধনাঢ্য ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী ও সরকারি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতেন। তাঁর প্রতিপক্ষ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছদ্মনাম শিপন ওরফে সাগরের নির্দেশে সাইফুল আলম মেম্বার রকিবকে কবিরাজি ওষুধ দেওয়ার কথা বলে ডেকে আনলে পরিকল্পনামতো ওত পেতে থাকা তাঁদের সহযোগী জুয়েল, রাজু, হৃদয় অজ্ঞাত আরও অনেকেই রকিবুলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাঁদের হাতে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। এতে রকিবুলের স্ত্রী বর্ষাও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধারের ঘটনায় অভয়নগর থানায় পৃথক মামলা হয়েছে।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন সাইফুল আলম মোল্যা (৪০), মিলন হালদার (৫২), সুব্রত মন্ডল (৫২), তুহিন হালদার (৩৪), পিযুস মন্ডল (২৭), মেহেদী হাসান সবুজ (২৩) ও জিয়াউর রহমান (৪০)।