একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শেরপুর সদর উপজেলার ঐতিহাসিক সূর্যদী গণহত্যার ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ‘সূর্যদীর গল্প’ নাটকটি শেরপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে তৃতীয়বারের মতো মঞ্চায়ন হয়েছে।
পুলিশ লাইনস মাল্টিপারপাস শেডে ৭ মে (রোববার) রাত ৯টায় নাটকটির মঞ্চায়ন হয়।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম-এর সভাপতিত্বে মঞ্চায়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নাটকটি উপভোগ করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. আনিসুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আরএমপি কমিশনারের সহধর্মিণী অ্যাডভোকেট ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী, শেরপুর পুনাক সভানেত্রী সানজিদা হক মৌ, শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. সোহেল মাহমুদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাইদুর রহমান ও সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ) তাহমিনা আক্তার।
এ ছাড়া জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য নাটকটির মঞ্চায়ন উপভোগ করেন।
১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর সকাল ৮টায় স্থানীয় রাজাকারদের নির্দেশে শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদী গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সেদিন গ্রামবাসী কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাকিস্তানি বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। পুড়িয়ে ছাই করে দেয় প্রায় ২০০ ঘরবাড়ি।
ওই সময় গ্রামের একটি ধানখেতে লুকিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধা আফছার উদ্দিন দূর থেকেই ফাঁকা গুলি করতে থাকেন। গুলির আওয়াজ পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনীরা লাইনে দাঁড় করানো লোকদের ফেলে রেখে ছুটে যায় তাঁর সন্ধানে।
পরে পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধা আফছার উদ্দিন ও সূর্যদী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আক্তারুজ্জামানকে একটি ধানখেতে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সেদিন মুক্তিযোদ্ধা আফছারের আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রায় ৫০ জন নিরীহ গ্রামবাসী প্রাণে বেঁচে যান। শহীদ হন গ্রামের ৪৯ জন নিরীহ মানুষ।
সেদিনের ঘটনা অবলম্বনে ‘সূর্যদীর গল্প’ নাটকটি পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম-এর গবেষণা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে রচনা করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইমরান আহম্মেদ পিপিএম ও শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শিবশংকর কারুয়া।