রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে রমজান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পিচ্চি মনিরকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-সেবা (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবর ডিএমপি নিউজের।
তিনি বলেন, ১৭ অক্টোবর ভোররাতে রমজান আলী ওরফে পেটকাটা রমজানকে তাঁর কামরাঙ্গীরচরের বাসার সামনে পরপর পাঁচটি গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। ভিকটিমের বোন এই হত্যাকাণ্ডসংক্রান্ত একটি নিয়মিত মামলা করলে থানা-পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ডিবি পুলিশও মামলাটির তদন্ত শুরু করে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গত ৯ নভেম্বর এই ঘটনায় লালবাগ জোনাল টিম একটি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ চোরা জুয়েল, টাইগার রাব্বি, আলী হোসেন ও সাগরকে গ্রেপ্তার করলে রমজান হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়। ডিবি পুলিশের কাছে তাদের দেওয়া তথ্য, বিজ্ঞ আদালতের জবানবন্দিতে ও তদন্তে দেখা যায়, এলাকায় মাদক ব্যবসা, চোরাই মোবাইল, সাইকেল ও স্বর্ণালংকারের কেনাবেচা, এক আসামির স্ত্রীর সঙ্গে নিহত রমজানের অবৈধ সম্পর্ক এবং সর্বোপরি ২০১৭ সালে রমজান কর্তৃক অন্যতম আসামি পিচ্চি মনিরের বড় ভাইকে হত্যাসংক্রান্ত বিষয়ে ভিকটিমের সঙ্গে আসামিদের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল।
তদন্তকালে গ্রেপ্তারদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, জুয়েল ও রানা কেরানীগঞ্জের একটি বাসা থেকে স্বর্ণালংকার চুরি করতে গিয়ে গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ ২টি পিস্তল চুরি করে। ১০০০ পিস ইয়াবা আর ৭ কেজি গাঁজার বিনিময়ে জুয়েল তার ভাগে পাওয়া ১টি পিস্তল দিয়ে দেয় পিচ্চি মনিরকে। চুরি করা সেই পিস্তল দিয়েই পিচ্চি মনির, চোরা জুয়েল এবং টাইগার রাব্বি গত ১৭ অক্টোবর গভীর রাতে ৫টি গুলি করে হত্যা করে কামরাঙ্গীরচরের পেটকাটা রমজানকে।
তিনি বলেন, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল চোরা জুয়েল ও পিচ্চি মনির। হত্যাকাণ্ডের পরে অন্যরা ধরা পড়লেও পিচ্চি মনির পালিয়ে যায় নারায়ণগঞ্জের পাগলায়, এরপর বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে। ভবঘুরেভাবে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরেঘুরে একটা পর্যায়ে খাগড়াছড়ির যার কাছ থেকে ইয়াবা এবং গাঁজা ক্রয় করত, তার কাছে চলে যায় পিচ্চি মনির। গত বুধবার খাগড়াছড়ি থেকে মূল আসামি পিচ্চি মনিরকে গ্রেপ্তার করে তারই দেখানো মতে কামরাঙ্গীরচর থেকে উদ্ধার করা হয় ২টি গুলিসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সেই পিস্তল। ইতোপূর্বে গত ৯ নভেম্বর এই হত্যাকাণ্ডের অপর ৪ আসামিকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৩টি গুলিসহ উদ্ধার করেছিল ডিবি-লালবাগ বিভাগ।
এ গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে এবং গ্রেপ্তার চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিগুলো জবানবন্দি দিয়েছে মর্মে যোগ করেন গোয়েন্দা এই পুলিশ কর্মকর্তা।