মালির মিনুসমা গুন্দাম ক্যাম্পে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন ব্যানএফপিইউ-২ এর বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং একই সঙ্গে মালির শহীদ দিবস হওয়ায় মালির মিনুসমা গুন্দাম ক্যাম্পে ভিন্নভাবে দিবসটি পালন করে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশ ফর্মড পুলিশ ইউনিট।

দিনের শুরুতে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে ব্যানএফপিইউ-২ এর কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আনপোল আইপিও টিম লিডার উলি মরিসসহ অন্যান্য আইপিও ও সিভিল সদস্য এবং আইভরি কোস্ট সেনা ডিটাচমেন্ট ক্যাম্পের সদস্যরা।

মালির মিনুসমা গুন্দাম ক্যাম্পে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন আইভরি কোস্টের কমান্ডাররা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, শান্তিরক্ষী হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের স্মৃতিচারণা ও অনুভূতি ব্যক্ত এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মালির স্থানীয় গুন্দাম শহরের মেয়র মহামন আলিডজি সিসে, ট্রান্সজিশনাল অথরিটির প্রেসিডেন্ট আবুকও হাগনা তুরে, পুলিশ কমিশারিয়েট ও জেন্ডারমারির প্রতিনিধি, জেন্ডার (নারী) অফিসের চিফ মম বুটি তুরে, গুন্দাম সার্কেলের প্রিফেক্টের প্রতিনিধি, ইমাম আলমাম ইব্রাহিম সিসে, অন্যান্য চিফ, লোকাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট, কমিউনের প্রেসিডেন্টসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদনে গুন্দাম ক্যাম্পে আসেন। তাঁদের সামনে ব্যানএফপিইউ-২-এর কমান্ডার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান বাংলাদেশের স্বাধীনতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরেন। পরে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বিশেষ মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে ব্যানএফপিইউ-২ কন্টিনজেন্ট।

শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ক্যাম্পে আসেন মালির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আগের দিন ২৫ মার্চ কালরাতের স্মরণে গুন্দাম ক্যাম্পে রাত ৯টা ১ মিনিট ব্লাকআউট পালন করা হয় এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ রাজারবাগ’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। ২৬ মার্চ বিকেলে ‘স্বাধীনতা কাপ ভলিবল টুর্নামেন্টের’ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ওই খেলায় টংকা টাইগার্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুকিত হাসান খানের নেতৃত্বে টিম নিয়াফুঙ্কে ওয়ারিওর্স। এ ছাড়া আইভরি কোস্টসহ অন্যান্য আফ্রিকান দেশের সঙ্গে একটি প্রীতি ভলিবল ম্যাচ খেলা হয়। প্রধান অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে মেডেল ও ট্রফি তুলে দেন। রাতে ব্যানএফপিইউর উদ্যোগে বর্ণিল আলোকসজ্জা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বারবিকিউ ডিনার পার্টির আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা মো. লুৎফর রহমানের ছেলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান, কমান্ডার ব্যানএফপিইউ-২ মালির গুন্দামে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মধ্যে ১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের হাতে তাঁদের বীর পিতার সম্মানার্থে সম্মাননা তুলে দেন।