মানি লন্ডারিং ও অর্থ পাচার রোধে প্রয়োজন বিভিন্ন সংস্থার পারস্পারিক সমন্বয়, সহযোগিতা, অভিজ্ঞতা ও ইনফরমেশন শেয়ারিং, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, কঠোর তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ।
আজ ১০ জুন মানি লন্ডারিং বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগোর ( সিআইডি) প্রধান
অতিরিক্ত আইজিপি, মোহাম্মদ আলী মিয়া, বিপিএম, পিপিএম একথা বলেন।
সকাল ১০টায় সিআইডি সদর দপ্তরে ” মানি লন্ডারিং: ট্রেন্ডস অ্যান্ড কম্পিউটিং দ্য চ্যালেঞ্জেস” শীর্ষক এ সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক এর হেড অব বিএফআইইউ (ডেপুটি গভর্ণর) মো. মাসুদ বিশ্বাস এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক এদিপ বিল্লাহ। সেমিনারে সিআইডির ডিআইজি (এইচআরএম) মো. মাইনুল হাসান পিপিএম, এনডিসি, এর সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ও প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডঃ খান সরফরাজ আলী।
সেমিনারে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিশেষ করে মানি লন্ডারিং এর গতি-প্রকৃতি ও প্রতিরোধের কৌশল বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সিআইডি প্রধান বিএফআইইউ এর প্রধানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ও ক্রেস্ট প্রদান করেন।
সিআইডি’র উদ্যোগে ইতোমধ্যে তদন্তকারী ও তদন্ত তদারককারী কর্মকর্তাদের আরো দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিষয়ে ৭টি ব্যাচে সর্বমোট ৪৫০ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং এই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সেমিনারটি আয়োজন করা হয়। সিআইডিতে কর্মরত বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ প্রতিরোধ, অপরাধীদের সনাক্ত, মামলার তদন্ত পরিচালনা, পারিবারিক এবং সামাজিক সচেতনতাসহ যাবতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় সমন্ধে আলোকপাত করা হয়। সেমিনারে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাপোর্ট নিশ্চিত করা, যাবতীয় ট্রেড সম্পর্কিত তথ্য সংরক্ষণ, ক্ষমতাপ্রাপ্ত সাতটি তদন্ত সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, সন্দেহজনক লেনদেন কঠোর মনিটরিং ও রিপোর্টিং, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ও প্রযুক্তির ব্যবহার, জি টু জি (গভর্ণমেন্ট টু গভর্ণমেন্ট) দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন, মানি লন্ডারিং বিষয়ে দেশব্যাপী প্রচার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রসিকিউশনের জন্য প্যানেল আইনজীবি নিয়োগ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
সিআইডি প্রধান সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদ তুলে দেন।
সিআইডি প্রধান তার বক্তব্যে বলেন, সেমিনারটি মানি লন্ডারিংয়ের উপর একটি কার্যকরী ও সময়পোযোগী সেমিনার। তিনি বলেন বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ট্রেড বেজ্ড সেক্টর, রিয়েল এস্টেট এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানসমূহ প্লেসমেন্ট, লেয়ারিং এবং ইন্টিগ্রেশন পদ্ধতিতে মানিলন্ডারিং করে থাকে। একটি দেশের সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ দমন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, আর্থিক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দুর্নীতি দমনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ মানি লন্ডারিং ও অর্থ পাচার রোধে প্রয়োজন বিভিন্ন সংস্থার পারস্পারিক সমন্বয়, সহযোগিতা, অভিজ্ঞতা ও ইনফরমেশন শেয়ারিং, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, কঠোর তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ। এ লক্ষ্যে মানি লন্ডারিং সমস্যা কিভাবে প্রশমিত হবে সে বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং মামলা তদন্ত ও অর্থ পাচার রোধে সিআইডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা ইতোমধ্যে দেশ ও বিদেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। সিআইডি’র তত্ত্বাবধান ও উদ্যোগে খুব শীঘ্রই মানি লন্ডারিং মামলার ক্ষমতাপ্রাপ্ত তদন্তকারী ৭টি সংস্থার সমন্বয়ে একটি যৌথ কর্মশালার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।