নিহত হামাস নেতা সালেহ আল-আরৌরি। ছবি-সংগৃহীত

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান সালেহ আল-আরৌরি নিহত হয়েছেন। তিনি ছাড়াও এ ঘটনায় আরও তিনজন নিহত হন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির দাহিয়েহতে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে এ ড্রোন হামলা চালানো হয়। খবর রয়টার্সের।

তাঁর মৃত্যুতে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ আরও বেশি অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

লেবাননের জাতীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ড্রোনটি হামাসের একটি অফিসে আঘাত হানে। দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামাস কর্মকর্তা এবং লেবাননের সুন্নি ইসলামপন্থী জামা’আ ইসলামিয়া উপদলের মধ্যে একটি বৈঠককে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।

হামলায় মোট চার ফিলিস্তিনি এবং তিনজন লেবাননের নাগরিক নিহত হয়েছেন।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হামলার পর এটাই ছিল ফিলিস্তিনি অঞ্চলের বাইরে হামাস কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে প্রথম হামলা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ বলেছেন, ইসরায়েল এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। “তবে যারা এ কাজ করেছে, তারা লেবাননের রাষ্ট্রের ওপর হামলা চালায়নি।

রেগেভ সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘যারা এটা করেছে, তারা হামাসের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা সুনির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়েছে।’

আরৌরি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপপ্রধান এবং এর সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি সম্প্রতি লেবানন ও কাতার উভয় দেশেই সময় কাটিয়েছেন এবং হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে জিম্মিদের নিয়ে আলোচনার মধ্যস্থতা করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে অভিহিত করেছে। গত বছর আরৌরি সম্পর্কে তথ্যের জন্য ৫ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব করেছিল দেশটি।

এদিকে হামাস আরৌরি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং বলেছে, ‘কাসাম ব্রিগেড কর্মকর্তা সামির ফিন্ডি আবু আমের এবং আজাম আল-আকরা আবু আম্মারও নিহত হয়েছেন।’ হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘আরৌরির হত্যাকাণ্ড একটি সন্ত্রাসী কাজ, লেবাননের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের শত্রুতার সম্প্রসারণ।’

ইসলামিক জিহাদ এক বিবৃতিতে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছে, ‘এই অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।’ ইরানও এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও শক্তিশালী করবে তাঁর মৃত্যু। এদিকে ইয়েমেনের হুতি আন্দোলনও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে।