চট্টগ্রামে মাইক্রোবাসের আরোহীদের পিটুনিতে এক বাসচালক মারা যাওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোররাতে নগরীর বায়েজিদ থানার আমিন কলোনি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. আনোয়ার হোসেন (২৯), মো. মোর্শেদ (১৯) এবং মো. রবিউল (২৩)। তাঁরা পরস্পরের আত্মীয়।
২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমিন জুট মিল এলাকায় হাটহাজারী থেকে শহরের দিকে আসা এক বাসচালককে মারধর করেন একটি মাইক্রোবাসের আরোহীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দুর্ঘটনা ঘটতে পারে জেনেও ওই বাসকে মাইক্রোবাসের দিকে চাপিয়ে আনছিলেন চালক।
পিটুনিতে আহত বাসচালক আবদুর রহিমকে (৪৬) হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন তাঁরা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে হাটহাজারী ও অক্সিজেন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ওই মাইক্রোবাস আরোহীদের সন্ধানে কাজ শুরু করে। হাটহাজারী থানার চৌধুরী হাট থেকে নগরীর মুরাদপুর পর্যন্ত ৭০টি সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের শনাক্তে কাজ করা হয়। পরে ভোররাতে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে।
সেদিন আসলে কী ঘটেছিল, তা-ও এই তদন্তের মধ্য দিয়ে জানতে পারে পুলিশ। ওসি কামরুজ্জামান জানান, আনোয়ার, মোর্শেদ ও রবিউল ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফটিকছড়ি থেকে চট্টগ্রাম নগরীর আমিন কলোনিতে তাঁদের বাসায় ফিরছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট পার হওয়ার পর হাটহাজারী থেকে শহরের দিকে আসা দ্রুতযান পরিবহনের একটি বাস (চট্ট মেট্রো জ-১১-১৫৮৫) ওই মাইক্রোবাসকে ‘চাপ’ দেয়।
এরপর চৌধুরীহাট পেট্রলপাম্প এলাকায় চট্ট মেট্রো জ-১১-১৬৬২ নম্বরের অন্য একটি বাস দেখে মাইক্রোবাসের আরোহীদের ধারণা হয়, এটাই বোধ হয় সেই বাস। সেই সন্দেহ থেকে তাঁরা বাসটির গতি রোধ করে চালককে নামিয়ে মারধর করেন।
এতে বাসের চালক আনোয়ার হোসেন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন।
ওসি বলেন, ‘মাইক্রোবাস আরোহীরা তাঁদের ভুল বুঝতে পেরে সেখান থেকে দ্রুত সরে পড়েন। বালুছড়া এলাকায় এসে তাঁরা আসল বাসটি দেখে পিছু নেন। আমিন জুট মিলের উত্তর গেটে পৌঁছে তাঁরা বাসটির গতিরোধ করেন এবং চালক আবদুর রহিমকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করেন।’
আহত চালক আবদুর রহিম বাকলিয়া থানার রাহাত্তার পুল এলাকায় নিজের বাসায় চলে যান। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা রাতেই তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক রহিমকে মৃত ঘোষণা করেন।